স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় কমানোর জন্য প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, চিকিৎসাব্যবস্থার পরিবর্তে যদি আমরা স্বাস্থ্যসেবা খাতের প্রথম স্তর হিসেবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি তাহলে শুধু ব্যয় কমবে না, জাতির স্বাস্থ্যও সুসংহত হবে এবং আয়ু বৃদ্ধি পাবে।
গত রোববার রাতে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশস্থ আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টারের (এডব্লিউসি) আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব।
মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিলে যেসব রোগের চিকিৎসা গ্রহণে মানুষ ব্যয় করে, সেগুলোর পূর্বাভাস করা সম্ভব হবে। যার ফলে শুধু চিকিৎসার খরচ কমবে না, মানুষের কর্মক্ষমতা ও স্বাস্থ্যও উন্নত হবে।
এডব্লিউসির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মজিবুল হক সেমিনারে তার ১১ বছরের অভিজ্ঞতা তুলে বলেন, আমাদের দেশের খাদ্যাভ্যাসে পোল্ট্রি ডিম, পোল্ট্রি দুধ ও মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রবাহিত হচ্ছে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
এ সময় তিনি দাবি করেন, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার এতটাই বেড়ে গেছে যে, খাদ্যপণ্যগুলোতে এর পরিমাণ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত চলে গেছে। এই অ্যান্টিবায়োটিক আমরা প্রতিদিন না চাইলেও গ্রহণ করছি। এর ফলে পেটের ভালো ব্যাকটেরিয়াও মারা যায়, ফলে শারীরিক ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
এডব্লিউসির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবী ব্যক্তিরা। সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য সেন্টার অব ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিনের কনসালটেন্ট অধ্যাপক ড. মজিবুল হক মূল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি নিয়ে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
অনুষ্ঠান শেষে ড. মজিবুল হক বলেন, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমাদের আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি সাধারণ মানুষ সুস্থ জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলে, তবে দেশব্যাপী দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে।