রাজধানীর আফতাবনগর ও রামপুরা বনশ্রী এলাকার মধ্যে সহজ যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলতে নড়াই নদীর (রামপুরা খাল) ওপর তিনটি সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। গতকাল সোমবার আফতাবনগর লেকভিউ রোডে আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রশাসক প্রধান অতিথি থেকে নির্মিতব্য তিনটি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
তিনটি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে দুটি সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে এবং অন্য সেতুটি হেঁটে পারাপারের জন্য ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কারিগরি সহায়তায় সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আফতাবনগর ও বনশ্রী এলাকার সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নড়াই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, আফতাবনগর এলাকায় ভবিষ্যতে যানবাহনের চাপ বাড়বে। সেই চাপ সামলাতেই এ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রগতি সরণি হয়ে রামপুরার যানজট নিরসন ও মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলাকালে মানুষের চলাচলের বিড়ম্বনা কমানোর জন্য এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রশাসক আরও বলেন, ‘আমরা যেসব অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করছি, তা নাগরিকদের প্রতি কোনো অনুগ্রহ নয়; বরং এটি তাদের অধিকার। এ অধিকার বাস্তবায়ন করাই আমাদের দায়িত্ব। নাগরিক সমস্যার দ্রুত সমাধানে গণশুনানির মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, যদিও কাউন্সিলর না থাকায় সেবা দিতে আমাদের বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে।’ প্রশাসক নগরবাসীকে নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানে উৎসাহিত করে বলেন, সঠিকভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স দিলে আমরা দ্রুত ও কার্যকরভাবে নাগরিক সমস্যার সমাধান করতে পারব।
পরিকল্পিত নগরায়ণের পথে হাউজিং সোসাইটিগুলোর কার্যক্রম অন্তরায় সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন, ঢাকার বড় সংকট হলো হাউজিং সেক্টরে আমরা ন্যূনতম মান বজায় রাখি না। এর ফলে নগরায়ণ হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে। এ সমস্যা মোকাবিলায় আমরা লোকাল এরিয়া অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছি যাতে ভবিষ্যতের ঢাকায় খেলার মাঠ, পাবলিক স্পেস ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা যায়। তিনি শহর উন্নয়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, শহর গড়ে উঠেছে মূলত প্রাইভেট সেক্টরের উত্থানের কারণে। তাই শহরের ন্যায্যতা রক্ষায় তাদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুল হাসান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সারওয়ার এবং ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর জাহাঙ্গীর আদিল সামদানি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভাগীয় প্রধান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা এবং বনশ্রী আফতাবনগরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।