ধর্ম ‘অবমাননার’ অভিযোগে করা মামলায় ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল রোববার অপূর্বকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই চাঁদ মিয়া। তিনি ‘স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে’ রাজি হওয়ায় তা নথিবদ্ধের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম সেফাতুল্লাহ আসামির জবানবন্দি নথিবদ্ধ করেছেন বলে তথ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, জবানবন্দি শেষে অপূর্বকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ৪ অক্টোবর রাতে কয়েকটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেসবে অপূর্ব পাল কোরআন অবমাননা করেছেন বলে বিভিন্ন পোস্টে অভিযোগ তোলা হয়। ওই শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়। এর মধ্যেই রাত ১টার দিকে অপূর্ব পালের বাসার সামনে জড়ো হতে থাকেন ক্ষুব্ধ অনেকেই।
খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করে ভাটারা থানার পুলিশ। প্রথমে তাকে আটক করতে জনতার সহায়তা চায় পুলিশ, জনতার তরফেও পুলিশকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশ অপূর্বকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা অপূর্বকে মারধর শুরু করে। জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপরও ক্ষিপ্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ আসে। মারধরের মধ্যেই পৌনে ৩টার দিকে অপূর্বকে হেফাজতে নিতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরদিন এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অপূর্বকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপূর্ব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি আগেও সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন একই বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী। মামলা হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর অপূর্বকে ‘স্থায়ী বহিষ্কার’ করেছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। গত মঙ্গলবার আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।