রাজধানী ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে সিএনজি ছিনতাইয়ের একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ৯ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরা চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে সিএনজি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- করিম মিয়া, মান্নান খান, মনসুর ওরফে মোশারফ, মজিবর, জসিম, মনির, জামাল হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম রবিন ও ইউনুস।
ডিবির বরাত দিয়ে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত পহেলা অক্টোবর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম বাসস্ট্যান্ডে চা খাচ্ছিলেন সিএনজিচালক মো. শাহজালাল। এক অপরিচিত যাত্রী ৩০০ টাকায় আটি বাজার যাওয়ার কথা বলে গাড়ি ভাড়া করে। ওই যাত্রী তখন কৌশলে সিএনজিচালকের চায়ে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয়। সিএনজিচালক চা খাওয়া শেষে যাত্রীকে নিয়ে রওনা করার কিছুক্ষণের মধ্যে সে প্রচ- ঘুম অনুভব করে। তখন বসিলা মেট্রো হাউজিং গেটের কাছে গাড়ি থামাতেই শাহজালাল অচেতন হয়ে পড়ে। চক্রটি তাকে রাস্তায় ফেলে সিএনজি, মোবাইল ও মানিব্যাগের ৩ হাজার ৫৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে চক্রটি সিএনজিচালকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে সিএনজির মালিক জয়কে ফোন করে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে জয় ৬০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর ওই দিন রাতে চক্রটি জয়কে পুনরায় ফোন দিয়ে জানান, সিএনজিটি মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবর স্থানের সামনে রাস্তার ওপর রাখা আছে। পরে জয় গিয়ে সেখান থেকে সিএনজিটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় গত ৬ নভেম্বর একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। পরে গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে করিম মিয়া, মান্নান খান, মনসুর ওরফে মোশারফ, মজিবর, জসিম, মনিরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ডিবির আরেকটি দল মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মূল হোতা জামাল হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম রবিন ও ইউনুসকে গ্রেপ্তার করে। তাদের হেফাজত থেকে দুটি সিএনজি, ১ হাজার ৯০০ পিস চেতনানাশক ট্যাবলেট এবং নগদ এক লাখ টাকা উদ্ধার করে। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীবেশে সিএনজি ভাড়া করে চালকদের চেতনানাশক ট্যাবলেট খাইয়ে সিএনজি ছিনতাইয়ে জড়িত ছিল।

