ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ইউটিউব দেখে কৃষি উদ্যোক্তা খালিদ হাসান দিপু অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। শুধু তরমুজের মৌসুমে নয়, সারা বছরই চাষ করা হচ্ছে। মাচায় ঝুলছে থোকায় থোকায় রসালো তরমুজ।
খালিদ হাসান দিপুর ভাষ্য উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামের গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করলেও এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে পেয়েছেন তরমুজের বাম্পার ফলন। চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক। ভালো দাম পেলে এবার লাভবান হবেন। দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফলের চাষ করে ইতিমধ্যেই একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন।
এবার তিনি ১২০ শতাংশ জমিতে আধুনিক মালচিং ও মাচা পদ্ধতিতে ‘সূর্য ডিম’ হলুদ ও সবুজ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন আগে সবজি চাষ করতেন লাভ তেমন হতো না। ইউটিউবে দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহ তৈরি হয়। গত বছর অল্প পরিমাণে চাষ করি, এবার বড় পরিসরে করেছি। প্রতি তরমুজ ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের হয়েছে। এ জাতের তরমুজের চাহিদা প্রচুর। তরমুজের সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে চাল কুমড়া, করলা ও বেগুন। তরমুজ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা আর বিক্রি করতে পারবেন আরও ৮ লাখ টাকার তরমুজ। মালচিং ব্যবহারে আগাছা ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়, আর মাচা পদ্ধতিতে কম জায়গায় বেশি ফলন পাওয়া যায়। মৌসুমি না হওয়ায় এই সময় বাজারে তরমুজের দামও ভালো। ফলে মাঠ থেকেই ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন, বিক্রিতে ঝামেলা নেই। পাইকার নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে তরমুজসহ বিভিন্ন ফল কিনে গাজীপুর, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার ও বাদামতলী আড়তে নিয়ে বিক্রি করে থাকি।
স্থানীয় মীর সিয়াম বলেন, বর্ষাকালে তুরমুজ চাষাবাদ আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম। এই তরমুজ চাষে এলাকায় সারা ফেলেছে দিপু। প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও তরুণ উদ্যোক্তারা তার খামারে এসে পরামর্শ নিচ্ছেন।
কৃষি উদ্যোক্তা জহিরুল ইসলাম দিপু বলেন, আমি গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করলেও এ বছর আমি ১২০ শতাংশ জমিতে তরমুজ ও সাথী ফসল হিসেবে চালকুমড়া, করলা, বেগুন চাষ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকার মতো। তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত খরচের চেয়ে ও দ্বিগুন টাকা মুনাফা পেয়েছি। তরুণ উদ্যোক্তা কেউ চাষাবাদ করতে চাইলে আমি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করব।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের প্রদর্শনীতে সূর্য ডিম’ ও আস্থা জাতের তরমুজ চাষ করছে এবং ভালো ফলন হয়েছে। এ জাতের তরমুজ ৯০ দিনের একটা ফসল যদি এখানে ও ৮৫ দিনের মধ্যে হারভেস্ট করা হয়েছে। চাষাবাদে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, তার দ্বিগুন লাভ হয়েছে। কৃষক বা নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা কেউ চাষাবাদ করতে চাইলে উপজেলা কৃষি তাদের সহযোগিতা করবে।

