সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় রোপা আমন ধানের চারা বিক্রির ধুম পড়েছে। চলতি মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন। যাদের আমন ধানের চারার বীজতলা নেই, তারা স্থানীয় হাট-বাজার থেকে চারা কিনে খেতে রোপণ করছেন। বর্তমানে উপজেলায় এক পণ (৮০ মুঠো) ধানের চারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে এক মুঠো চারা ৩ থেকে ৪ টাকায় কেনা-বেচা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলার সলঙ্গা, রামকৃষ্ণপুর, হাটিকুমরুল ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে কৃষকেরা রোপা আমনের চারা রোপণ শুরু করেছেন।
উপজেলার গোজা গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকদের কেউ কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ কেউ ধানের চারা রোপণ করেছেন। বেশির ভাগ কৃষক নিজস্ব বীজতলায় উৎপাদিক চারা রোপণ করছেন। তবে যাদের নিজস্ব চারা নেই, তারা এলাকার হাট-বাজার থেকে পছন্দমতো চারা সংগ্রহ করে রোপণ করছেন।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার সলঙ্গার বিভিন্ন বাজারে আমনের চারা বিক্রি হতে দেখা গেছে। আলী আশরাফ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি গুটি স্বর্ণা, স্বর্ণা, ২৯, ৩৯, ৪৯সহ কয়েকটি জাতের চারা বিক্রি করছেন। আরেক ব্যবসায়ী জসমত বলেন, তাড়াশের মাধাইনগর, ঝুরঝুরি, কালীবাড়ি, বোয়ালিয়া-সরাপপুর, রামকৃষ্ণপুরের চক নিহাল, ক্ষুদ্র শিমলা, ধুবিলের আমশড়া, নৈপাড়া, বেতুয়াসহ আশপাশের এলাকার কৃষকেরা নিজেদের বীজতলা থেকে চারা তুলে এনে তাদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। অনেক কৃষক নিজেদের জমিতে চারা লাগানোর পর বাড়তি চারা এনেও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। আবার কেউ কেউ ব্যবসার জন্য আমনের বীজতলায় চারা তৈরি করে সেই চারা তুলে এনেও বিক্রি করছেন।
রবিউল করিম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এক পণ চারা এখন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ হিসাবে এক মুঠো চারা ৩ থেকে ৪ টাকা পড়ছে। কৃষকদের কাছে গুটি স্বর্ণা ও স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চারার চাহিদা বেশি বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, ইতিমধ্যেই এক হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে, জতিমে চারা রোপণের পরিমাণ ততই বাড়ছে। চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে রোপা আমন ধানের আবাদে কৃষি প্রণোদনায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৪০০ কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে আমন ধানের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকদের অনেকেই নিজস্ব বীজতলার চারা জমিতে লাগাচ্ছেন। যাদের চারা নেই তারা কিনে লাগাচ্ছেন। এ ছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে আমন আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন