টাঙ্গাইলের সখীপুরে মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সেই দুই ছাত্রী এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এই খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
জানা যায়, গত ৩ জুলাই সকালে সায়মা ও লাবনী নামের দুই পরীক্ষার্থী মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়। পৃথক দুটি হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে গত ২ জুলাই দিবাগত রাতে। সায়মা আক্তার হাতিয়া গ্রামের মো. রায়হান খানের মেয়ে এবং লাবনী আক্তার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে। তারা দুজনই মায়ের মত্যুমর এমন শোকের মুহূর্তে বুক ভরা কান্না চেপে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
সায়মা আক্তার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী এবং সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে লাবনী আক্তার সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বি এম কলেজের শিক্ষার্থী, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে।
দুই পরীক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুলাই দিবাগত রাত ৩টার দিকে সায়মার মা শিল্পী আক্তার (৪০) নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অপরদিকে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান লাবনীর মা সফিরন বেগম (৪৫)। সায়মা ও লাবনী দুইজনই পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান। শোকের এমন সময়ে ভেঙে পড়লেও আত্মীয়-স্বজন ও শিক্ষকদের সাহচর্যে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে আসেন তারা।
হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, সায়মার মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ঘটনাটি সত্যিই হৃদয়বিদারক। আল্লাহ যেন তাকে শক্তি দেন। সে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
সানস্টার ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন জানান, লাবনীর মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মানসিকভাবে অনেক কঠিন। তবুও ও যে সাহস দেখিয়েছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৪.৫৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।