ঢাকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

প্রেসক্রিপশনে সাপোজিটরি খাওয়ার নির্দেশনা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ০২:৩৬ এএম

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক প্রেসক্রিপশনে রোগীকে ‘সাপোজিটরি খাওয়ার’ নির্দেশনা দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে প্রেসক্রিপশনটির একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন ফয়সাল শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি পোস্টে লেখেন, ১৩ তারিখ রাতে খালাতো ভাইকে নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাই। ডাক্তার জ্বরের ওষুধ হিসেবে, সাপোজিটরি, খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু আগে কখনো এটা খাওয়া হয়নি, কেউ জানলে বলবেন কীভাবে খেতে হয়!

ফয়সাল শেখ নামের এক ব্যক্তি গতকাল বুধবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে তার নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে ও ‘উই আর রাজবাড়ীয়ানস’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রেসক্রিপশনটির ছবি পোস্ট করেন। ফেসবুক পোস্টে ফয়সাল শেখ লেখেনÑ ‘১৩ তারিখ রাতের ঘটনা- রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খালাতো ভাইকে নিয়ে গিয়েছিলাম ডাক্তার দেখানোর জন্য। ৪ দিন ধরে জ্বর। জ্বর বেশি হলে ডাক্তার সাপোজিটরি খাওয়ার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু আগে কখনো সাপোজিটরি খাওয়া হয়নি, তাই জানি না এটা কীভাবে খেতে হয়। কারো যদি পূর্বে সাপোজিটরি খাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে শেয়ার করবেন। (বি. দ্র. প্রেসক্রিপশন করেছেন ডাক্তারের সহকারী, নিচে সিগনেচার ডাক্তারের)’

ওই পোস্টটি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নেটিজেনদের মাঝে হাস্যরসের পাশাপাশি চিকিৎসাব্যবস্থার শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স রওশন আরা বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ডাক্তার সংকট রয়েছে। অনেক সময় রোগীর চাপ বেশি থাকলে ডাক্তার একা সামাল দিতে পারেন না। সে সময় ইন্টার্ন বা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা প্রেসক্রিপশন লেখেন, পরে ডাক্তার সই করে দেন। ভুলবশত এমনটি হয়ে থাকতে পারে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, সাপোজিটরি খাওয়ার ওষুধ নয়, এটি সাধারণত পায়ুপথে প্রয়োগ করা হয়। প্রেসক্রিপশনে এমন ভুল হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ম্যাটস শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নিলেও তাদের প্রেসক্রিপশন করার এখতিয়ার নেই।

ভুল প্রেসক্রিপশনটি নিয়ে এখন রাজবাড়ীজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, স্বাস্থ্যসেবায় এমন অব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাব রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।