ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

৪০ বছরেও লাগেনি আধুনিক শিক্ষার ছোঁয়া

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:৩২ এএম

ডিজিটাল বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে পিছিয়ে রয়েছে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার নলবুনিয়া মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি নলছিটি উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হলেও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

বিদ্যালয়টি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে কলেজে রূপান্তরের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যালয়টি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির অনুমতি পায়। সেই থেকে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাতায়াতের রাস্তাটির বেহাল দশা। শিক্ষার্থীদের একটি জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোনো পাকা টয়লেট। তিন কক্ষবিশিষ্ট একতলা একটি ভবন আছে যার একটিতে অধ্যক্ষ বসেন, আরেকটিতে শিক্ষকরা, বাকি একটি শ্রেণিকক্ষ।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সারিকা আক্তার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভালো একটি ভবন নেই। রাস্তার বেহাল দশার কারণে আমাদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়। আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো একটি পাকা টয়লেট নেই।’

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিফাত রূপালী বাংলাদেশকে বলে, ‘আমরা আধুনিক যুগে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে পিছিয়ে আছি। যদি আমাদের বিদ্যালয়ে একটি ডিজিটাল ল্যাব থাকত, আমরা শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শিখে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পারতাম। বৃষ্টির দিনে ভাঙাচোরা রুমে বসে ক্লাস করতে হয়। আমাদের বই-খাতা এমনকি আমরাও ভিজে যাই। এ কারণে আমাদের লেখাপড়া ব্যাহত হয়।’

অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলেন, ‘আমাদের একটি ল্যাব না থাকায় আমরা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছি। তাই আমাদের একটি ডিজিটাল ল্যাব খুব জরুরি। এ ছাড়া আমাদের মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবন হলে লেখাপড়ার মান আরও ভালো হতো।’

এ বিষয়ে নলবুনিয়া মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহনাজ পারভীন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখা ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছে। কলেজ শাখাটি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি, যার ফলে কলেজের শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্কুল ও কলেজ শাখা মিলে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছে, প্রায় ২৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। আমার প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার মান সবসময়ই ভালো। কিন্তু আমাদের এখানে একটি ভবন ও একটি ডিজিটাল ল্যাব না থাকায় শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে পিছিয়ে রয়েছে।’