ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

কী মধু সিভিল সার্জন কার্যালয়ে! 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:৪২ এএম
  • অবসরের পরও কাজ করছেন দুই কর্মকর্তা 
  • ৯ বছর পরও অফিস ছাড়তে নারাজ তারা
  • অফিস করাকে ‘মধু খাওয়া’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক প্রধান সহকারী হারুন অর রশিদ ও জাহিদুল হক। এদের মধ্যে হারুনের অবসরের মেয়াদ ৮ বছর ৯ মাস এবং জাহিদুলের ২ বছর ১০ মাস শেষ হয়েছে। তবে অবসরের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। সম্প্রতি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে তাদের দেখা গেছে। অবসরের এত বছর পরও নিয়মিত অফিস করার ঘটনাকে ‘মধু খাওয়া’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় লোকজন।

এদিকে সদর হাসপাতালে কর্মরত থাকার কথা থাকলেও আয়া রুনা আক্তার ১১ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। যেখানে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ৫০ শয্যার জনবলও নেই। রুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কাজ করছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ও জাহিদুল হক ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর অবসরে (পিআরএল) যান। এরপরও নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন তারা। আগের স্থানেই চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করছেন। 

অভিযোগ রয়েছে, অন্যস্থান থেকে জনবল নিয়োগ দেওয়া হলেও হারুন ও জাহিদদের কারণে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তারা যোগদান করতে পারেন না। যখন যে সিভিল সার্জন থাকেন, তাকে ম্যানেজ করেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে গা ভাসান হারুন ও জাহিদ। 

জানতে চাইলে সাবেক প্রধান সহকারী জাহিদুল হক বলেন, আমি কোনো বেতন-ভাতা নিই না। শুধু সহযোগিতা করার জন্যই অফিসে আসা-যাওয়া করি। আর সাবেক প্রধান সহকারী হারুন অর-রশিদের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আয়া রুনা আক্তার বলেন, আমি ২০১০ সালে যোগদান করেছি। ১১ বছর ধরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে আছি। নতুন নিয়োগ নেই। এ জন্য আমি সিভিল সার্জনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত ও পুলিশ কেইস রিপোর্ট লিপিবদ্ধ করি। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এর মাধ্যমে লুটপাট, অরাজকতা হচ্ছে। অবসরে যাওয়ার পরেও কর্মকর্তারা কীভাবে অফিস করেন, তা জবাবদিহিতার আওতায় আসা দরকার। তারা স্বাস্থ্য বিভাগকে জিম্মি করে লুটপাটের সঙ্গে জড়িত। 

জেলা সিভিল সার্জন আবু হাসান শাহীন বলেন, আমাদের অফিসে লোকবল কম থাকার কারণে অবসরের পরও দুজন কর্মকর্তা অফিস করেন। মূলত তারা অফিসিয়ালভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান না। আর সদর হাসপাতালের থেকে আমার অফিসের লোকবল কম, এ জন্য রুনা আক্তার এখানেই কাজ করছেন।