ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

প্রকল্পের টাকা প্রাসাদে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:৪৫ এএম
  • বিআরডিবিতে ১.৮৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ
  • দুদকের মামলায় ৭ জনের পরোয়ানা
  • আত্মসাতের টাকায় গড়েছেন ৫ তলা ভবন
  • পরোয়ানা জারি, কেউ গ্রেপ্তার নয়

গাইবান্ধা জেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে (বিআরডিবি) প্রায় ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হিসাবরক্ষক আনিছুর রহমানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ছয়জন ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন।

রংপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দায়ের করা মামলায় আদালত সাতজনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, বিআরডিবির হিসাবরক্ষক আনিছুর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার রেজাউল করিম, প্রিন্সিপাল অফিসার নজরুল ইসলাম, কমলেশ চন্দ্র প্রামাণিক, সিনিয়র অফিসার জাকির হোসেন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের নিরীক্ষা কর্মকর্তা লায়লা নুরুন্নাহার বেগম ও শাহ বজলুল করিম।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আনিছুর রহমান গাইবান্ধা জেলা বিআরডিবি কার্যালয়ে হিসাবরক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এ সময়ে তিনি চারজন উপপরিচালকের স্বাক্ষর স্ক্যান করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

তিনি ‘পল্লী বাজার প্রকল্প’ নামে ৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার স্থায়ী আমানতের অর্থ কৌশলে নিজের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে উত্তোলন করেন। একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা, পেনশন ও কল্যাণ তহবিল থেকেও ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ অর্থে তিনি গাইবান্ধা শহরের শাপলা মোড় এলাকায় বিলাসবহুল পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেন।

ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর বিআরডিবি কর্তৃপক্ষ তাকে বদলি করে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী তদন্তে আনিছুর রহমানের নামে একাধিক সরকারি প্রকল্পের অর্থ তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা করে উত্তোলনের প্রমাণ মেলে।

বিআরডিবির তৎকালীন উপপরিচালক আব্দুস সবুর দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হয় এবং একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে আত্মসাতের সত্যতা পাওয়ায় ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর আনিছুর রহমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

পরবর্তীতে দুদকের অনুসন্ধানে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ প্রমাণ পাওয়া গেলে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে গাইবান্ধা বিশেষ জজ আদালতে মামলা ও চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত সাতজনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নজরদারি চলছে। খুব শিগগিরই প্রধান আসামিসহ অন্যদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’