রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

ভাঙা স্লিপারে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

ভাঙা স্লিপারে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রায় আড়াই হাজার কংক্রিট স্লিপার ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এগুলো মেরামত না করায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রেন চলাচল। পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলায় নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেললাইনের সবেচেয়ে বেশি স্লিপার ভেঙেছে পাবনার ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পর্যন্ত। এই পথের ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘলাইনের রেলপথে প্রায় আড়াই হাজার স্লিপার ভাঙা রয়েছে।

সেখানে দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, এখানে ৪৮ কিলোমিটার রেলপথে প্রায় আড়াই হাজার স্লিপার ভেঙেছে। এর মধ্যে কিছু আছে একেবারেই ভেঙে গেছে। আবার কিছু আছে ভাঙা শুরু হয়েছে। তবে এই ৪৮ কিলোমিটারে প্রচুরসংখ্যক স্লিপার ভেঙে পড়ায় ট্রেন চলাচল কিছুটা হলেও ঝুঁকিরমুখে পড়েছে বলেও স্বীকার দায়িত্বরতরা। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন ট্রলি গাড়িতে ঘুরে এই পথ পরিদর্শন করছেন রেল কর্মকর্তারা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০০৩ সাল থেকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় ৩৪৫ কিলোমিটার লাইনে কংক্রিটের স্লিপার বসানো কাজ শুরু হয়। তবে কয়েক বছর যেতে না যেতেই আমদানি করা এই স্লিপারগুলো ভাঙতে শুরু করে। এরই মধ্যে কয়েক দফা পরিবর্তনও করা হয়েছে। তবে বর্তমানে ব্যাপক হারে স্লিপার ভেঙে পড়ায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ট্রেন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রায় প্রতিদিন টহল দেওয়া হচ্ছে রেললাইন। তবে আশার কথা হলো ভাঙা স্লিপারগুলো সরিয়ে নতুন করে বসাতে ২২ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি এখন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। একনেকে পাশ হলেই কাজ শুরু হবে। অচিরেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে জানান রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

পাবনার ঈশ্বরদীর স্থানীয় বাসিন্দা আলমাছ আলী বলেন, গত কয়েক বছর আগে অনেকগুলো স্লিপার পরিবর্তন করতে দেখেছিলাম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এখন আবার প্রচুর পরিমাণে স্লিপার ভেঙে পড়েছে। ফলে ট্রেন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা লিখন আহম্মেদ জানান, গত চার বছরে উল্লাপাড়া থেকে চাটমোহর রেলস্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনে ট্রেন চলাচলের সময় কমপক্ষে পাঁচবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর বড়ালব্রিজ স্টেশনে ও ২০২৩ সালের ৫ মে উল্লাপাড়ায় মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ২০২৫ সালের ২৪ জুন ভাঙ্গুড়া স্টেশনের পাশে এবং একই বছর ২০ সেপ্টেম্বর দিলপাশার রেলস্টেশনের পাশে লাইনে ফাটল ধরে বস্তা দিয়ে ট্রেন পারাপার করতে হয়। সর্বশেষ এবছর গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গুড়া স্টেশনের পাশে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে ট্রেন চলাচল ৬ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিনই রেললাইনের স্লিপার ভেঙে যায়। এতে ট্রেন চলাচলে কিছুটা ঝুঁকি থাকে। তবে প্রায়ই এসব ভাঙা স্লিপার পরিবর্তন করা হলেও স্লিপার ভাঙা রোধ করা যায় না। ফলে মাঝে মাঝেই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা বলেন, জয়দেপুর থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ৩৪৫ কিলোমিটারে প্রায় ৫০ হাজার স্লিপার ভাঙা রয়েছে। এর বাইরে আরও কিছু স্লিপার ভাঙার কবলে পড়েছে। সেগুলোতে ফাটল ধরে আছে। যেগুলো একেবারেই ভেঙে পড়েছে, সেগুলো দ্রুত পরিবর্তন করা দরকার। জরুরিভাবে পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু ঢালাওভাবে পরিবর্তন করা যাচ্ছে না বাজেট না থাকায়।

পশ্চিমাঞ্চল রেওলয়ের প্রধান প্রকৌশলী আহম্মদ হোসেন মাসুম জানান, ‘জয়দেপুর থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার স্লিপার ভাঙার তথ্য আছে আমার কাছে রয়েছে। এর জন্য রেল তেমন ঝুঁকিতে নেই। যে হারে স্লিপার ভেঙেছে, তাতে মোট লাইনের সাড়ে ৫ লাখ স্লিপারের মধ্যে বড় জোর ২-৪ ভাগ স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ঝুঁকি তেমন নাই। তার পরেও এই স্লিপারগুলো দ্রুত পরিবর্তনের জন্য আমরা নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এটি পাশ হলে আগামী ৫ বছর এই লাইনের স্লিপার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তিনি আরও বলেন, এবার আর আমদানি নয়, দেশেই তৈরি হচ্ছে কংক্রিটের স্লিপার। আমরা দেশে তৈরি স্লিপারই ব্যবহার করব। তবে কাঠের চেয়ে কংক্রিটের স্লিপারই বেশি টেকসই বলে উল্লেখ করেন তিনি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!