প্রথমবারের মতো নারী এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে নারী এশিয়া কাপের আসর। এই টুর্নামেন্ট ঘিরে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে ভালো করতে পারলে প্রথমবারের মতো বিশ^কাপে খেলারও সুযোগ পেতে পারে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। কেননা, ১২ দলের এশিয়া কাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারলেই ব্রাজিল বিশ^কাপ খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। তাই ঋতুপর্ণা-আফঈদাদের নিয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাফুফে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাফুফের অন্যতম সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর অফিসে ফেডারেশন সভাপতি তাবিথ আউয়ালসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা অনানুষ্ঠানিক সভা করেছেন। সেই সভায় এশিয়া কাপ থেকে বিম্বকাপে খেলার জন্য এই সময়ে কী কী প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে মূলত। শুধু মাঠের অনুশীলন ও প্রীতি ম্যাচ নয়, ফুটবলারদের স্বাস্থ্য এবং খাবার নিয়েও গভীরভাবে বিশ্লেষণ হয়েছে। সভায় নারী ফুটবল দলের সঙ্গে যাওয়া চিকিৎসকও ছিলেন। তার পর্যবেক্ষণÑ বাংলাদেশ নারী ফুটবলারদের হিমোগ্লোবিন কম এবং বিশ^কাপ পর্যায়ে খেলতে হলে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন। সভাপতিসহ উপস্থিত কমিটির সবাই জাতীয় দলের আনুষ্ঠানিক ক্যাম্প শুরুর আগে সব ফুটবলারের সাধারণ চেকআপ করানোর পক্ষে মত দিয়েছেন, যা আগে সেভাবে হয়নি।
এশিয়া কাপে জাপান, কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে লড়তে হবে বাংলাদেশকে। এই দলগুলো শুধু টেকনিক-ট্যাকটিসেই এগিয়ে নয়, শারীরিকভাবেও বেশ শক্তিশালী। বাংলাদেশ নারী দলে অনেক ফুটবলারেরই ওজনে ঘাটতি রয়েছে। কালকের আলোচনায় ওজনের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি বেশি পুষ্টিকর খাবার প্রদানের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। নারী ফুটবল দল সাধারণত বাফুফে ভবনসংলগ্ন আর্টিফিশিয়াল টার্ফে অনুশীলন করত। এই টার্ফ সংস্কার হওয়ায় কখনো বুয়েট, কখনো আবাহনী, আবার কখনো কিংস অ্যারেনায় ছুটতে হয়। অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া এশিয়া কাপের প্রস্তুতির জন্য বাফুফে আফঈদাদের সুনির্দিষ্ট একটি মাঠ দিতে চায় আবাসন সুবিধাসহ। এ জন্য ঢাকা কিংবা ঢাকার আশপাশে বেশ কয়েকটি বিকল্প খুঁজছে ফেডারেশন। নারী ফুটবলাররা দেশকে নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। এর বিপরীতে তেমন আর্থিক সচ্ছলতা তাদের আসেনি। এশিয়া কাপ নিশ্চিত হওয়ার পর ঋতুপর্ণাদের মাসিক বেতন মাত্র ৫৫ হাজার টাকার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। মেয়েদের আর্থিক বিষয়াদির উন্নতি এবং নিয়মিত করতে এবার বেশ সচেষ্ট হয়েছে ফেডারেশন। এশিয়া কাপ নিশ্চিত করা অন্য দেশগুলো এরই মধ্যে কাজ শুরু করলেও বাংলাদেশের খানিকটা সময় লাগছে। জাতীয় দলের অনেক ফুটবলারই বয়সভিত্তিক দলে খেলছেন। কোচ বাটলারও এই দলগুলো সামলাচ্ছেন। ফলে সেপ্টেম্বর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূলত বাংলাদেশ কাজ করার সুযোগ পাবে। নভেম্বরে সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :