ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুপার ওভারে হেরে যাওয়ায় সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ে বাংলাদেশের। আজ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ের আনন্দে ভাসতে চায় টাইগাররা। এ জন্য সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেকেই পাখির চোখ করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। এই ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে এখন বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭৪ রানে জিতলেও গত ম্যাচে হেরে যায় স্বাগতিকেরা। সুপার ওভারে জয় পেয়ে সিরিজে ফিরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারাও চাইবে বাংলাদেশের মাটিতে আরেকটি ওয়ানডে সিরিজ জয়ের গল্প রচনা করতে। তবে সিরিজ জিততে আত্মবিশ^াসী মিরাজরাও।
সঠিক পরিকল্পনা, ক্যাচ ম্যাচ আর ব্যাটিংয়ে অদক্ষতার কারণে গত ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। ইনিংসের শেষ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাইফ হাসান বোলিং করেছেন। কিন্তু শেষ বলে ক্যাচ মিস করেন নুরুল হাসান সোহান। যে কারণে ম্যাচটি সুপার ওভারে যায়। ম্যাচ শেষে শেষ ওভারে সাইফকে বোলিং দেওয়ার কারণ জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। আক্ষেপ করলেন ক্যাচ মিস হয়ে যাওয়া নিয়েও। তিনি বলেন, ‘আমাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না। আমাদের বিশ্বাস ছিল, একটি উইকেট নিতে পারলেই ম্যাচ জিততে পারব। ওই ক্যাচ নিতে পারলে (শেষ বলে) আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম। এখন পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আমরা।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগে কখনো ওয়ানডে ক্রিকেটে সুপার ওভার খেলার অভিজ্ঞতা হয়নি বাংলাদেশের। প্রথমবার সুপার ওভার খেলায় দল খেই হারিয়েছে বলে মনে করেন মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় ৪০ বছরের পথচলায় ৮১৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ প্রথমবার ম্যাচ ‘টাই’ করল গত মঙ্গলবার। রোমাঞ্চ-উত্তেজনার নানা স্রোত পেরিয়ে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই দলই থামে ২১৩ রানে। পরে সুপার ওভারে ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। সুপার ওভারে ক্যারিবিয়ানরা তোলে ১০ রান। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার পর কোনো বৈধ ডেলিভারির আগেই স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৪ রান। প্রথম বলটি ওয়াইড করেন আকিল হোসেন, পরের বলটি করেন ‘নো’, সেই বল থেকে দৌড়ে রান আসে আরও দুটি। এরপর ছয় বলে কেবল সাত রান দরকার ছিল জয়ের জন্য। আকিল পরে ওয়াইড করেন আরও একটি। তার পরও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। মিরাজ জানান, নতুন কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি তারা। তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য এটা ছিল নতুন অভিজ্ঞতা, আমাদের প্রথম সুপার ওভার। মোস্তাফিজ দারুণ বোলিং করেছে (সুপার ওভারে)। আমরা খুশি হতাম যদি জিততে পারতাম।’ মিরাজ আরও বলেন, ‘১০ রান (১১) দরকার ছিল আমাদের। একটি বাউন্ডারি পেলেই ভিন্ন কিছু হতে পারত।’
আজ তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভিন্ন কিছুই করতে চায় বাংলাদেশ। হারের হতাশা ভুলে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য থাকবে মিরাজদের। ভুলগুলো শুধরে নতুনভাবে শুরু করতে চাইবে বাংলাদেশ। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে টাইগাররা। আজ মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের উৎসব, নাকি আরেকটি হতাশার গল্প রচিত হবে, তা দেখার অপেক্ষা।