শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৮:০৮ এএম

শরতের শাপলা ও পদ্ম বিল

মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৮:০৮ এএম

শরতের শাপলা ও পদ্ম বিল

শরতের আকাশে ভেসে বেড়ায় তুলোর মতো সাদা মেঘ। নরম বাতাসে প্রকৃতি হয়ে ওঠে শান্ত ও মনোমুগ্ধকর। এই সময় বাংলাদেশের গ্রামীণ প্রকৃতি অনন্য রূপ ধারণ করে। এমন সময় নীল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ বিলে যখন ফুটে থাকে লাল-সাদা শাপলা কিংবা পদ্ম ফুল, তখন যেন গ্রামীণ প্রকৃতি পরিণত হয় স্বপ্নের সবপ্নের দুনিয়ায়। আর তাই, এই সৌন্দর্যের টানে প্রতি বছর হাজারো ভ্রমণপ্রেমী ছুটে যান দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা খালে-বিলে। চলুন জেনে নিই দেশের জনপ্রিয় কিছু শাপলা ও পদ্ম বিলের ঠিকানা ও ঢাকা থেকে কীভাবে সেখানে যাওয়া যায়; সে সম্পর্কে-

সাতলা বিল, বরিশাল

শাপলার রাজ্য বলতেই অনেকের চোখে ভেসে ওঠে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা বিল। প্রায় ১০ হাজার একরজুড়ে বিস্তৃত এই বিলে শরৎকালে হাজার হাজার লাল শাপলা ফোটে। নৌকা নিয়ে ভ্রমণকালে গেলে মনে হয় পুরো বিলটি যেন রক্তিম ফুলের কার্পেটে ঢাকা। সকালে গেলে শাপলার রং আরও গাঢ় ও মনোমুগ্ধকর লাগে।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে লঞ্চ বা বাসে করে গিয়ে বরিশাল শহরে নামতে হবে। সেখান থেকে উজিরপুর হয়ে সহজেই যাওয়া যায় সাতলা বিলে। স্থানীয়দের কাছ থেকে পর্যটকদের জন্য নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।

বিকি বিল, সুনামগঞ্জ

হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ মানেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভান্ডার। বিকি বিলও তার ব্যতিক্রম নয়। শাপলার সমারোহে ভরে ওঠা এই বিল প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য। শরতের নির্মল পরিবেশে এখানে ঘুরতে গেলে মনে হবে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছেন।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জগামী বাসে উঠতে হবে। শহর থেকে স্থানীয় যানবাহনে করে পৌঁছানো যাবে বিকি বিলে।

জিন্দা গ্রামের বিল, নারায়ণগঞ্জ

ঢাকার কাছেই অবস্থিত এই বিল ভ্রমণকারীদের জন্য খুবই সহজলভ্য। রূপগঞ্জ উপজেলার জিন্দা গ্রামে গেলে চোখে পড়বে শাপলা ও পদ্মের অসাধারণ সমাহার। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে অল্প সময়েই ঘুরে আসার মতো আদর্শ একটি স্থান এটি। পাশেই রয়েছে জিন্দা পার্ক। একসঙ্গে অনেক অভিজ্ঞতা হবে।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে রূপগঞ্জগামী বাসে উঠতে হবে। সেখান থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি রিজার্ভ করে পৌঁছানো যাবে জিন্দা গ্রামে। সেখানে থেকে বিল খুঁজে নিতে কষ্ট হবে না মোটেও।

ডিবির হাওর, সিলেট

সিলেটের প্রকৃতি বরাবরই ভ্রমণকারীদের কাছে টানে। ডিবির হাওর সেই আকর্ষণের মধ্যে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বর্ষাকালে হাওর ভরে যায় পানিতে, শরৎকালে শাপলার লাল আভা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোরের আলোয় কিংবা সন্ধ্যার আগে আগে এখানে গেলে চোখ জুড়িয়ে যায়।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে সিলেট শহরে যান। সেখান থেকে সিএনজি বা স্থানীয় পরিবহন ব্যবহার করে চলে যান ডিবির হাওরে। লাল ফুলের বিল ও আশপাশের পাহাড় অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।

গোবিন্দচাতাল বিল, নেত্রকোনা

নেত্রকোনার অন্যতম আকর্ষণীয় এই বিলে বর্ষা ও শরৎকালে ভেসে ওঠে পদ্ম ফুলের সমারোহ। বিলের জলে ভাসতে ভাসতে গোলাপি ও সাদা পদ্মের পাপড়ি মায়ার আবহ ছড়িয়ে দেয় প্রকৃতিতে। এই বিলের আশপাশের গ্রামীণ দৃশ্য ভ্রমণকে করে তোলে আরও উপভোগ্য।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে বাসে করে নেত্রকোনা শহরে পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে স্থানীয় যানবাহনে সহজেই গোবিন্দচাতাল বিলে যাওয়া যায়।

বড়বিলা বিল, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বড়বিলা বিলে রয়েছে শাপলা, শালুক ও পদ্মসহ নানা রঙের জলজ উদ্ভিদের সমাহার। সকাল বা বিকেলে এখানে নৌকা ভ্রমণে গেলে মনে হবে, ফুলের বিছানার ওপর ভেসে চলেছেন। নানারকম পাখির ডাক ও প্রকৃতির রূপ মিলেমিশে ভ্রমণ হবে অনন্য।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসে উঠুন। ময়মনসিংহ শহর থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বড়বিলা বিলে পৌঁছানো যাবে।

বাফলা বিল, নীলফামারী

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডী ইউনিয়নের বাফলা গ্রামে অবস্থিত এই বিলটি শরৎকালে যেন ফুলের স্বর্গে রূপ নেয়। লাল, সাদা, গোলাপি; নানা রঙের শাপলা ফুটে চারপাশকে করে তোলে রঙিন। বিশেষ করে এই বিলের সাদা শাপলার সমাহার দর্শকদের চোখে প্রশান্তি আনে।

যেভাবে যাবেন :

ঢাকা থেকে নীলফামারীগামী ট্রেন বা বাসে উঠতে হবে। নীলফামারী শহর থেকে স্থানীয় যানবাহনে বাফলা বিলে যাওয়া যায়।

ঘোড়াদীঘি বিল, নেত্রকোনা

নেত্রকোনা সদরের কেগাতি ইউনিয়নে অবস্থিত ঘোড়াদীঘি বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে রয়েছে গোলাপি শাপলার আধিক্য। ভোরবেলায় শাপলার পাপড়ি মেলে ধরা দৃশ্য মনকে মোহিত করে। এটি স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্তের ভ্রমণকারীদের কাছেও সমান জনপ্রিয়।

যেভাবে যাবেন :

নেত্রকোনা শহর থেকে স্থানীয় সিএনজি বা ইজিবাইকে ঘোড়াদীঘি বিলে যাওয়া যায়।

টিপস

ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিলে যাওয়ার সেরা সময়। এই সময়ের মধ্যে গেলে ফুলগুলো পূর্ণ প্রস্ফুটিত অবস্থায় দেখা যায়। বেশির ভাগ বিলে নৌকায় ঘুরে শাপলা-পদ্মের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। নৌকায় ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে নিলে ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

ফুটন্ত ফুলের ছবি অসাধারণ হয়, ক্যামেরা সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। ফুল গাছেই সুন্দর, তাই তুলে আনার চেষ্টা করবেন না। গ্রামীণ রেস্টুরেন্টে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। কোনো বিলেই আবর্জনা ফেলবেন না।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!