শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০২:০৬ পিএম

নিম্নমানের সামগ্রীতে সড়ক নির্মাণ, চিঠি দিয়েও নিরুপায় এলজিইডি 

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০২:০৬ পিএম

নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণাধীন প্লাসাইটিং।     ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণাধীন প্লাসাইটিং। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় নিম্নমানের সামগ্রীতে চলছে সড়কের নির্মাণকাজ। এক দিন পর খুলে পড়ছে প্লাসাইটিংয়ের ইটের গাঁথুনী। কর্তৃপক্ষের চিঠিতেও কর্ণপাত নেই নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের সাড়ে ৬ কোটি টাকা।

স্থানীয়দের অভিযোগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভেলাবাড়ি বাজার জিসি থেকে দুর্গাপুর জিসি সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দরে চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই এটি সংস্কার করতে প্রকল্প গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। দরপত্র অনুযায়ী ৯ কিলো ২২৫ মিটার দুরুত্বের সড়কের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি কাজের দায়িত্ব পান সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামে বগুড়ার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের ১৭ মার্চে করা চুক্তি মতে কাজটি আগামী আগস্ট মাসে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি  কাজই বাকি রয়েছে। ইতোমধ্যে দুই কিস্তিকে কিছু অর্থ ছাড় দিয়ে প্রকৌশল দপ্তর।

চুক্তিমতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু প্রথম থেকে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। নিম্নমানের ইট খোয়া ব্যবহার করে দায়সারা কাজ করতে শুরু করে। স্থানীয়রা ও বাস্তবায়নকারী আদিতমারী এলজিইডি বারংবার বাধা দিলেও কর্ণপাত নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির। এ সড়কের নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে খোদ জেলা প্রশাসন। মুখের কথায় কাজ না হওয়ায় কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী গত ২২ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের সামগ্রী সড়াতে এবং কাজের গুণগত মান ভালো করার তাগিদ দিয়ে পত্র পাঠান। এতেও কোনো কাজ হয়নি। কার্যত নিরুপায় হয়ে পড়েছে এলজিইডি।

প্রতিবাদের মুখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টক করা ইট সরিয়ে নিচ্ছে

সেই সড়কে মোট ৬টি পুকুর পাড়ে প্লাসাইটিং ধরা হয়েছে। এসব প্লাসাইটিংয়ে এক নম্বর ইট দিয়ে গাঁধুনির ওয়াল করার কথা। সেই প্লাসাইটিংয়ে দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের ইট ও নামমাত্র গাঁধুনি। ইটের জয়েন্টে নামমাত্র সিমেন্ট আর অধিক পরিমাণের বালু দিয়ে করা হয়েছে মিক্সিং (মসলা)। যা গাঁধুনির পরদিনই ভেঙে পড়েছে। এটা দেখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানালে সেই গাঁধুনি ভেঙে নতুন করে দেয়াল করা হলেও ভেঙে পড়া নিম্নমানের ইটই ব্যবহার করা হয়েছে পুনরায়। এমন খবরে মুঠোফোনে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) পারভেজ রুবেল।

স্থানীয় পথচারী জুয়েল বলেন, সিমেন্ট তো নেই, বালু দিয়ে কোনোরকম ইট জয়েন্ট দেওয়া হয়। গাঁধুনি শেষ হলেই প্লাসাইটিং মাটিতে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। যার কারণে গাঁধুনির পরে নিম্নমানের কাজ বোঝার উপায় থাকে না। কোনো কোনো দিন রাতেও কাজ করে শ্রমিকরা। মূলত কাজটা দায়সারা গোছের করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন ঠিকাদার বলেছেন, কাজটি পান বগুড়ার একজন ঠিকাদার। তার কাছ থেকে এ জেলার তিনজনের একটি প্রভাবশালী মহল বেশি কমিশন দিয়ে ক্রয় করেছেন। যার কারণে নিম্নমানের সামগ্রীতে লোকসানের ভয়ে নামমাত্র কাজ করছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার দাবি করা এক ব্যক্তি বলেন, কিছু নিম্নমানের ইট এসেছিল তা ভুলে শ্রমিকরা ব্যবহার করেছে। পরে সেই দেয়াল ভেঙে নতুন করে গাঁধুনি দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের হলেও পূর্বের ইটে সিমেন্ট বালু লাগার কারণে তা তো ফেরত নিবে না ভাটা। তাই এসব ব্যবহার করা হচ্ছে। যেসব ইট অব্যবহৃত স্টক ছিল তা সরিয়ে ভালো ইট আনা হচ্ছে। শ্রমিকদের ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে কথার সুযোগ হয়নি।

প্রকল্পটির সুপারভাইজর উপসহকারী প্রকৌশলী পারভেজ রুবেল বলেন, নিম্নমানের ইটের ভেঙে পড়া ওয়াল পুনরায় গাঁধুনিতে পূর্বের ইট ব্যবহার করার অভিযোগে ওই প্লাসাইটিংয়ের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি প্লাসাইটিংয়ের কাজ কিছুটা সন্তোষজনক হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক বলেন, শুরু থেকে এ প্রকল্পটিতে নিম্নমানের সামগ্রী ইট খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অনেকবার মৌখিকভাবে বলেছি, লিখিতভাবেও  একবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো কাজ হচ্ছে না। দ্বিতীয় দফায় পত্র পাঠানো হচ্ছে। এ প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আমরা বিধিমতো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!