শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম

দেশের জন্য শহীদ হওয়ার মানসিক প্রস্তুতি ছিল : হান্নান রাহিম

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম

হান্নান রাহিম। ছবি - সংগৃহীত

হান্নান রাহিম। ছবি - সংগৃহীত

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা নিজের জীবন বাজি রেখে রাজপথে লড়াই করেছেন, তাদের একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান রাহিম। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমকিা পালন করেন। তারা কুমিল্লায় প্রায়ই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকে চাঙা রাখেন। সেই সময় শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখেন হান্নান রাহিম।

নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার মোহাম্মদপুর গ্রামের সন্তান হান্নান রাহিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

বাসস: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। জুলাইয়ের সেই সংগ্রামী দিনগুলোর স্মৃতি এখনও অনুভব করেন কিনা?

হান্নান: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের স্মৃতি আজীবনের থেকে যাবে। আন্দোলনের প্রতিটা মুহূর্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে পার করতে হয়েছিল। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, এই বুঝি জীবন শেষ! মৃত্যুর জন্য মানসিক প্রিপারেশনও ছিল। দেশের জন্য শহীদ হওয়া বিশাল গৌরবের। গুলির বিপরীতে ইট পাথর দিয়ে আমরা লড়াই করেছি।

বাসস:  কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল?

হান্নান: জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা শুরু হয় ৪ জুলাই। মানুষের মাঝে বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে ফেলা, জনতার অধিকারকে কুক্ষিগত করার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয়।

বাসস: আপনারা কি শুরুতে জানতেন, এই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেবে?

হান্নান: আমাদের দাবি ছিল কোটা সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করা। শুরুতেই যদি সংস্কারের বিষয়গুলো মেনে নেওয়া হতো, আমার ভাই-বোনদের গায়ে নির্লজ্জভাবে হামলে পড়া না হতো, জীবন্ত মানুষকে লাশ বানিয়ে ফেলা না হতো, তাহলে এ আন্দোলন বেশি দূর আর যেত না । শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যেত। দিনশেষে আমরা কোটা বৈষম্যের বিপরীতে দেশের সার্বিক বৈষম্য অবসানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হই। গণজোয়ারে তা আপামর ছাত্র-জনতার মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়।

বাসস:  কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন ছিল?

হান্নান: কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরব ও সচেতন ভূমিকা পালন করেছে। ঢাকার আন্দোলনের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে ক্যাম্পাস, ক্যাম্পাসের বাহিরে, মহাসড়কে ও শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি এবং মৌন পদযাত্রার মতো কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি তুলে ধরা হয়। আমরা আন্দোলনের শুরুতে প্রায় প্রতিদিনই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিশাল মিছিল নিয়ে মহাসড়কে রওনা করতাম। বলা চলে, কুমিল্লার আন্দোলনের ‘পাওয়ার হাউস’ হিসেবে কাজ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

বাসস: ক্যাম্পাসে সহিংসতা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কোন দিকে নিয়ে যায় বলে আপনি করেন?

হান্নান: ক্যাম্পাসে সহিংসতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ চরিত্রকে ব্যাহত করে ভিন্নমাত্রা তৈরি করে। যেখানে আন্দোলনটি যুক্তিসম্মত ও অহিংস দাবির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছিল, সেখানে সহিংসতার ঘটনায় তা রাজনৈতিক ধাঁচের রূপ পায় এবং সরকার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানির ঘটনা আন্দোলনের প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি বাড়িয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে মানুষের মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়। সহিংসতা যেমন আন্দোলনকারীদের মনোবল কিছুটা ক্ষুণ্ন করে, তেমনি এটি আন্দোলনটিকে আরও বিস্তৃত ও বহুমাত্রিক করে তোলে।

বাসস: আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

হান্নান: কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছিল। কিন্তু পুলিশি হামলা ও রাজনৈতিক দমন-নিপীড়ন আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দেয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ যখন হামলা চালিয়ে তিনজন শিক্ষার্থীকে আহত করে, তখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে ছেলে-মেয়েরা বের হয়ে আসে। ছাত্রলীগ করা অনেক শিক্ষার্থীও এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং তারা নিজেদের জায়গা থেকে পদত্যাগ করতে শুরু করে। এতে করে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ছাত্রলীগ ১৫-২০ জনের সংখ্যালঘু দলে পরিণত হয়। আন্দোলন আরো বড় ধরনের মাত্রা পায়।

বাসস: আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন ছিল?

হান্নান: নারী শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল রাজপথ। নারীদের অংশগ্রহণ আন্দোলনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। সামনে থেকে তারা নেতৃত্বও দিয়েছে। ১১ জুলাই যখন পুলিশ হামলা চালায়, তখন নারীদের সাহসী নেতৃত্বে পুলিশের বাধা ঠেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অভিমুখে বীরদর্পে মিছিল নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। ১৮ জুলাই টিয়ার গ্যাস সহ্য করতে না পেরে যখন আমরা বারবার পিছু হটছিলাম, তখন তারা সামনে এগিয়ে যেতে তাগিদ দিয়েছিল। লাঠি হাতে বীরদর্পে রাজপথ মাড়িয়ে চলা নারীদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য।

বাসস: আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা কেমন ছিল?

হান্নান: শুরু থেকেই কুমিল্লায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯ জুলাই যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় এবং এর মাধ্যমে আন্দোলনের গতিরোধ করার চেষ্টা করা হয়, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল, হলগুলো আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এরপরও বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বাসা-বাড়ি ও মেসগুলোতে আশ্রয় নেয়। ১৯ জুলাই পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের গতি কিছুটা কমে যায়, কিন্তু আন্দোলন একেবারে থেমে যায়নি। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে কানেক্ট করার চেষ্টা চলে, আবারও জোরালো অবস্থান তৈরি করা হয়। ছাত্র-জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে এক গণজোয়ারের সৃষ্টি হয়। যার ফলে দৈত্যাকার স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত হয়।

বাসস: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি কীভাবে সফল করেছিলেন আপনারা?

হান্নান: শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন করা হতো। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিশাল শক্তি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হতো। আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কুমিল্লার কলেজসমূহ, বিভিন্ন স্কুলকলেজ ও  মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শুধু আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতেন। সবগুলো প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে আন্দোলনকে বেগবান করা হতো।

বাসস: স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল কিনা?

হান্নান: এটা তো অবশ্যই হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আন্দোলনে অংশ নিতে যাওয়ার সময় অসংখ্য শিক্ষার্থীকে গতিরোধ করে পথিমধ্যে মারধর করা হয়েছে, মেয়েদেরকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি মারধরও করা হয়। আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর বিভিন্ন সময় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছিল।

বাসস: আন্দোলন চলাকালে আপনি কী ধরনের হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন?

হান্নান: হত্যার উদ্দেশ্যে অনেকে খোঁজাখুঁজি করেছে। বিভিন্ন জায়গায় পাহারা বসিয়েছিল। দুঃখের বিষয় হলো, এখনো হত্যার হুমকি আসে।

বাসস: আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য আপনারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?

হান্নান: আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের সম্মানে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে আহতদের বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করা হয়। আর যতটুকু সম্ভব শহীদ পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাসস: আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ভূমিকা কেমন ছিল?

হান্নান: সাংবাদিকরা বলা চলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্পণ হিসেবে কাজ করেছে। তারা সাহসিকতার সাথে মাঠে থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। বলা যায়, প্রশাসনের চোখে চোখ রেখে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আন্দোলনের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুবিসাস এবং প্রেসক্লাবের সদস্যরা নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

বাসস: বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ভূমিকা কেমন ছিল?

হান্নান: অনেকেই শুরু থেকে আন্দোলনের তীব্র বিরোধিতা করে গেছেন। তাদের মধ্যে ন্যূনতম মানবিক বোধ জাগ্রত হয়নি। শিক্ষকরা যখন রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন, তখন শিক্ষকদের থেকে শিক্ষকসুলভ আচরণ প্রত্যাশাও করা যায় না। দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নই তাদের কাছে মুখ্য বিষয়।

বাসস: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা কেমন ছিল?

হান্নান: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই নির্লজ্জ ভূমিকা পালন করেছে। ১১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতেই ছাত্র আন্দোলন চত্বরে (আনসার ক্যাম্পের সামনে) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ বাহিনী। বলা বাহুল্য, সারাদেশে সর্বপ্রথম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েই ১১ জুলাই গুলি চালানো হয় এবং এতে ২০ জন আহত হন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একেবারেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের হল থেকে বের হতে বাধ্য করেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করে নিজ প্রাণ ভয়ে নতুন ক্যাম্পাসে গিয়ে আশ্রয় নেয়। অপরদিকে পুলিশ প্রশাসন একচোখা নীতি নিয়েই চলেছিল। ১১ জুলাই থেকে ৩৬ জুলাই সারাদেশে তারা ব্যাপক ধরপাকড় ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। অথচ ১৬ জুলাই পুলিশের বেশ কিছু কর্মকর্তা যখন কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোডে খুব বাজে সিচুয়েশনে পড়ে, আমরা তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয় পৌঁছে দিয়েছিলাম। আমরা তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়াছি, আর ভালোবাসার প্রতিদানে তারা বন্দুক দিয়ে গুলি করেছিল।

বাসস:  বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা?

হান্নান: বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারারসহ বেশ কিছু পদের পরিবর্তন হয়েছে। বাকি সবাই যার যার মতোই আছে। আবারও সেই আগের মতোই রাজনীতিকরণের দিকে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্ষমতার অপপ্রয়োগ এবং আর্থিক মনোবাসনা পূরণের ক্ষেত্র হতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। রাষ্ট্রীয়ভাবেও আমরা যতটুকু পরিবর্তন আশা করেছিলাম, সেখানেও ততটুকু পরিবর্তন হচ্ছে না। যার মধ্যে রয়েছে- ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম, হামলায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত এবং রাজনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফেরানো। এখনই পরিবর্তনের সময়, পরিবর্তন এখন না আসলে আর কখনোই আসবে না।

বাসস: জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আপনার প্রত্যাশা কী?

হান্নান: বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ নিরাপদে এবং সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে, কেউ কাউকে প্রভু দাবি করবে না, গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠিত হবে, আগের স্বৈরাচার থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে কেউ স্বৈরাচার হওয়ার স্বপ্ন দেখবে না।

বাসস: আপনাকে ধন্যবাদ।

হান্নান: বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা এবং আপনাকেও ধন্যবাদ ।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!