ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

চুমু খাওয়ার উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ০১:৫৪ এএম
প্রতীকি ছবি

ভালোবাসা শুধু অনুভবেই থেমে থাকে না, তা ছুঁয়ে যায় শরীর-মনকেও। আর সেই স্পর্শের সবচেয়ে আবেগময় রূপ ‘চুম্বন’। কিন্তু জানেন কি, ঠোঁটে একটি চুমু শুধু আবেগ নয়, তা হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও আশ্চর্য উপকারী?

ব্রিটিশ এসোসিয়েশন অব কগনিটিভ নিউরোসায়েন্স (বিএসিএন) এবং বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, ঠোঁটে চুমু খেলে শরীরে ‘অ্যান্ডরফিন’, ‘ডোপামিন’ আর ‘সেরোটোনিন’- এর মতো হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। 

এই হরমোনগুলোই একদিকে মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে, অন্যদিকে ব্যথা-বেদনা কমায়। ফলে শুধু মন ভালোই হয় না, কমে মাইগ্রেন বা মাসিকের সময়ের ব্যথাও।

তবে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘প্রতিবার চুমু খেলে ক্লান্ত বা অসুস্থ লাগার কারণ কী?’ এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চুম্বনের সময় আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়, হার্টবিট বেড়ে যায়, সক্রিয় হয় শরীরের অসংখ্য পেশি। 

এতে শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করে, হরমোনের ওঠানামা হয়, যার ফলে অনেকে হালকা ক্লান্তি বা মাথাঘোরা অনুভব করেন। গবেষণা বলছে, মাত্র আধা ঘণ্টার চুমুতেই ৬৮ থেকে ৯০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরে যেতে পারে।

চমকপ্রদ আরেকটি বিষয় হচ্ছে - চুম্বনের ফলে মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কারণ, মুখের ৩৪টি পেশি ও ১১২টি ভঙ্গিমা পেশি একসঙ্গে সক্রিয় হয় এই সময়। 

রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, মুখের ত্বকে আসে লাবণ্য। পাশাপাশি মুখ গহ্বরেও নিঃসরণ হয় প্রচুর লালা ও উৎসেচক, যা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দুর্গন্ধ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আবার, কপালে একটুকু চুমু শুধু ভালোবাসা নয়, মস্তিষ্কের জন্যও শান্তির বার্তা। ঘুমানোর আগে প্রিয়জনের কপালে হালকা চুমু ‘সেরোটোনিন’ হরমোন বাড়িয়ে গভীর ঘুমে সহায়তা করে। এ কারণে চুমুর পর অনেকেই হালকা ঝিমুনি বা তন্দ্রাচ্ছন্নতা অনুভব করেন।

অনেক সময় দেখা যায়, চুমুর পর কেউ কেউ বলে ওঠেন - ‘ঠান্ডা লাগছে’। এর ব্যাখ্যায় গবেষকেরা বলছেন, চুম্বনের সময় শরীর উত্তপ্ত হয়ে যায়, তার পর হঠাৎ হরমোনের পরিবর্তনে শরীর ঠান্ডা অনুভব করে। যদিও এটি আসলে মানসিক ও স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ারই অংশ।

সবশেষে গবেষকেরা বলছেন, চুম্বনের রয়েছে ৭টি বড় উপকারিতা -
১. দুশ্চিন্তা ও অবসাদ কমায়।
২. মাইগ্রেন বা মাসিকের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।
৩. মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ত্বকে লাবণ্য আনে।
৪. মুখ ও মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৫. হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা ভালো রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, অ্যালার্জির সম্ভাবনা কমায়।
৭. ফুসফুসকে শক্তিশালী করে ও শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিকতা বজায় রাখে।

চুম্বন তাই শুধু আবেগ নয়, তা হয়ে উঠতে পারে শরীরের জন্য প্রাকৃতিক ও মধুর এক থেরাপি। শুধু প্রেমই নয়, চুমু হোক সুস্থতারও প্রতীক।

তথ্যসূত্র: ব্রিটিশ এসোসিয়েশন অব কগনিটিভ নিউরোসায়েন্স , বাথ বিশ্ববিদ্যালয় (যুক্তরাজ্য), মার্কিন স্বাস্থ্য গবেষণা দল।