সিলেট নগরের লামাবাজার এলাকায় চা বিক্রেতা ও গেজেটভুক্ত ‘জুলাই যোদ্ধা’ ইসলাম উদ্দিনকে মারধরের অভিযোগে লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত (ক্লোজ) করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তদন্তে একজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের মিডিয়া সেলের সম্পাদক ও যুগ্ম সদস্য সচিব ফখরুল হাসান জানান, ফজরের নামাজের পর দোকান খোলার কারণ দেখিয়ে এসআই জসিম উদ্দিন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিনকে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী ইসলাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জিতু মিয়ার পয়েন্ট এলাকায় আমার চায়ের দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করি। হঠাৎ পুলিশের একটি গাড়ি এসে থামে। একজন পুলিশ সদস্য এসে জিজ্ঞেস করেন, এত সকালে কেন দোকান খুলেছি। কিছুক্ষণ পর এসআই জসিম উদ্দিন এসে উপস্থিত হয়ে আমাকে মারধর শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিচয় দেই যে আমি একজন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা। তখন তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘তোমরা তো পুলিশের ওপর হামলা করেছিলে, ফাঁড়ি জ্বালিয়েছিলে।’ এ কথা বলেই এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন এবং গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। পরে অন্য পুলিশ সদস্যদের হস্তক্ষেপে আমাকে ছেড়ে যান।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা ফখরুল হাসান জানান, আন্দোলনের সময় আহত হওয়ার পর ইসলাম উদ্দিন সিএনজি চালাতে পারেন না। তাই জীবিকার তাগিদে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান। ঘটনার সময় তাঁকে মারধর ও ভ্যানে তুলতে গেলে তিনি অনুরোধ করেন, পরিবার বাঁচানোর জন্য কাজ করছেন। কিন্তু এসআই জসিম তাতে কর্ণপাত না করে নির্যাতন চালান।
বর্তমানে আহত ইসলাম উদ্দিন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই যোদ্ধাদের সংগঠন। তাঁরা অভিযুক্ত এসআই ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই এসআই জসিম উদ্দিনকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আজকের মধ্যেই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’