নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের লকডাউনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড এড়াতে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রবেশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রবেশদ্বারে বন্দর ব্যবহারকারীদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা ও সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি শেষে বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে রাজধানীতে ১০টি বাস ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ এবং প্রায় ২০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক বাসচালক প্রাণ হারিয়েছেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
১২ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরসংলগ্ন এলাকায় যেকোনো মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও পথসভা আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও এক মাসের জন্য বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ছাড়া বিমানবন্দরগুলোতেও সতর্কতা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব আশঙ্কা থেকে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বেনাপোল বন্দরের ৩৪টি পণ্যাগার ও কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালে সবসময় প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন পণ্য সংরক্ষিত থাকে, যার বাজারমূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা। এসব পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরাপত্তাকর্মী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজজোহা সেলিম বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা ও নাশকতা ঘটছে। এতে আমরা আতঙ্কিত। বন্দরে নিরাপত্তা বাড়ানো জরুরি, যাতে দুর্বৃত্তরা কোনো ধরনের নাশকতা ঘটাতে না পারে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত কোনো নাশকতার তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাওয়া যায়নি। তবে বন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’
বর্তমানে বন্দরে ১৬৩ জন আনসার সদস্য, বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা আল আরাফা কোম্পানির ১২৯ জন এবং আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের ৪০ জন সদস্য নিয়মিত নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এ ছাড়া বন্দরের ৩৭৫টি সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিকভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস টিমকেও নাশকতামূলক যেকোনো ঘটনা প্রতিরোধে সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।



