তীব্র শীত ও ঠান্ডায় কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রাম। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় নাজুক অবস্থায় পড়েছে এ জনপদের মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লা ও স্বল্পপাল্লার যানবাহন।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর, নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষসহ নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।
তীব্র শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হচ্ছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের দিনমজুর মানিক মিয়া বলেন, “কয়েক দিন ধরে খুব ঠান্ডা। ঠান্ডার কারণে কোদাল ধরা যায় না, মাটি কাটা খুব কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ঠান্ডায় হাত-পা কাঁপে।”
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চরমাধবরাম এলাকার কৃষিশ্রমিক সেকেন্দার আলী বলেন, “ঠান্ডা এত বেশি যে ঘর থেকে বের হতে মন চায় না। কাজকাম করা খুব কষ্টকর। আমরা বয়স্ক মানুষ, এমন ঠান্ডায় কাজ করা মুশকিল।”
ধরলার বাঁধ এলাকায় বসবাসকারী বিধবা নারী আনারকলি বলেন, “নদীর পাশে আমার বাড়ি। এখানে ঠান্ডা খুব বেশি লাগে। একটা কম্বল পেলে এবারের শীতটা কোনোভাবে পার করা যেত।”
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, “জেলার নয়টি উপজেলায় শীতার্তদের জন্য উপজেলাভিত্তিক ৬ লাখ টাকা করে মোট ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কম্বল কেনার প্রক্রিয়া চলছে। তালিকা অনুযায়ী শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে।”
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, “দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। আপাতত তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।”


