তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিস্তা আন্দোলনের ব্যানারে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলার হেলিপ্যাড মাঠ থেকে একটি বিশাল গণ মিছিল শুরু হয়ে উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে সমাবেশে পরিণত হয়।
আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ‘তিস্তা নদী শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই তিস্তা নদী শুকিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে, কৃষক হারাচ্ছে তার ফসল, মানুষ হারাচ্ছে জীবিকা। তাই তিস্তা বাঁচানো মানেই উত্তরবঙ্গের মানুষকে বাঁচানো।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বললেও বাস্তবে এর কোনো বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। বিদেশি তহবিল ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরিবর্তে তারা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকল্পটিকে আটকে রেখেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তিস্তা পাড়ের লাখো কৃষক।’
দুলু আরও বলেন, ‘তিস্তা বাঁচানো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আমরা চাই, সরকার দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুক। না হলে উত্তরাঞ্চলের জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, ‘যদি তিস্তা নিয়ে অবহেলা চলতে থাকে, তাহলে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবে। আমরা নদী ও মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন: তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোশারফ হোসেন, পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধার তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক, এবিএম ফারুক সিদ্দিকী, আফজাল হোসেন প্রমুখ।
তারা তিস্তার ন্যায্য পানি বণ্টন, নদী খনন ও তীরবর্তী জনগণের পুনর্বাসনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দাবি জানান।
এর আগে গণমিছিলে ‘তিস্তা বাঁচাও’ শ্লোগানে মুখরিত হয় গোটা হাতীবান্ধা উপজেলা। গণমিছিলে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী অংশ নেন। তিস্তা বাঁচাও, উত্তরবঙ্গ বাঁচাও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো উপজেলা শহর।