মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অবস্থিত দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কেন্দ্র মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পর্যটকদের যাতায়াতের রাস্তা। রাস্তার একাংশ দেবে যাওয়ায় এবং গাইডওয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেখানে পর্যটকদের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে পারে, তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে বনবিভাগ এরই মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশে বালুর বস্তা ফেলে রাস্তা মেরামত করে চলাচল উপযোগী করেছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে লাল পতাকা টাঙিয়ে সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে।
মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের পর্যটন রেস্তোরার সামনের সড়কে দেখা গেছে, একটি বড় অংশ দেবে গেছে, পাশের গাইডওয়াল ফেটে গেছে এবং রেলিং বেঁকে পড়েছে। জলপ্রপাতের সিঁড়ির নিচের মাটিও ধসে পড়ছে, যা নতুন করে ঝুঁকি তৈরি করেছে।
জানা গেছে, ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বড়লেখায় টানা ভারী বৃষ্টি ও ঢলের ফলে প্রায় ৩৫ মিটার রাস্তা দেবে গেছে। এর আগেও ২০১৭ সালে একই স্থানে এমন ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছিল।
সিরাজগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা চার শিক্ষার্থী আব্দুল আলিম, আশিক হাসান, আছের উদ্দিন ও রনি আহমেদ জানান, তারা প্রথমবারের মতো মাধবকুণ্ডে এসেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেও রাস্তা দেবে যাওয়ার বিষয়টি তাদের জানার বাইরে ছিল। অনেক দূর থেকে এসে ঝুঁকি নিয়েই তারা স্থানটি ঘুরে দেখেন।
স্থানীয় ক্যামেরাম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, ‘কয়েক দিন আগের বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাটি দেবে গেলেও বনবিভাগ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ঈদের সময় আমরা একটু ভালো আয় করতে পারি, তবে এখনো পর্যটক আসা কম। আশা করি ঈদে ভিড় বাড়বে।’
মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের এসআই সুমন সিংহ বলেন, ‘আবহাওয়া বৈরি থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ও বনবিভাগের সমন্বয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।’
বড়লেখা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. রেজাউল মৃধা বলেন, ‘চার দিনের টানা বৃষ্টিতে মাধবকুণ্ডে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বালুর বস্তা দিয়ে তা মেরামত করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের অনুরোধ করব, যেন সবাই সতর্ক থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যান।’