মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে গত ৯ আগস্ট আব্দুর রহিম রাফি (২৬) নামে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পুলিশ তদন্তে ছোট ভাই রানা (১৬)-কে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের পর মাত্র ৫০০ টাকা না পেয়ে আপন বড় ভাইকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো দা দিয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।
ঘটনার তিনদিন পর সোমবার (১১ আগস্ট) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) নোবেল চাকমা।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি রানা জানান, হত্যাকাণ্ডের আগের রাত ৮ আগস্ট সে তার ভাই রাফির কাছে ৫০০ টাকা চাইলে রাফি তাকে গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। ৯ আগস্ট সকাল ৭ টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকায় রানা ঘুমিয়ে থাকা রাফির ওপর ধারালো দা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর সে দা ধুয়ে খাটের নিচে রেখে দেয় এবং রক্তমাখা লুঙ্গিও লুকিয়ে রাখে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক পটভূমিতে নিহত রাফি ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেন। রানা মাদ্রাসায় পড়ার বদলে বাড়িতেই বেশি সময় কাটাত, যা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।
এ ছাড়া রাফির পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করার বিষয়টিও পারিবারিক অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এইসব কলহ ও বিরোধ হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রভাব ফেলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধারকৃত দা ও রক্তমাখা লুঙ্গির কথাও নিশ্চিত করেছে। নিহত রাফির মা মনোয়ারা বেগম কমলগঞ্জ থানায় ১০ আগস্ট ২০২৫ সালে তার ছেলে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা নং-০৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী মামলা চলছে। অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হওয়ায় মামলা দ্রুত সমাধানের প্রত্যাশা রয়েছে।