রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা বর্ষণের কারণে ৫০০ বিঘার অধিক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আমন ধানের ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও কাঁচা-পাকা রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যা স্থানীয়দের দৈনন্দিন জীবন ও শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে খালের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দেবীপুর গ্রামের ডাহার বিল এলাকায় পুকুর খনন করে বিলের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় কলেজ মাঠসহ আশপাশের প্রায় ৩০০ বিঘা জমি গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে গেছে। এ জলাবদ্ধতা বছরের চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত থাকে এবং গত সাত বছর ধরে সমাধান না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
দেবীপুর বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম জানান, ‘কলেজ মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা মাঠ অতিক্রম করে ক্লাসে যাওয়া যায় না। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং মাঠে খেলাধুলাও বন্ধ রয়েছে। কলেজে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।’
তেলিবা, বহরমপুর, সিংগা, কিমসত বগুড়া, শালঘরিয়া সহ অন্যান্য এলাকায় প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পুকুর খননের ফলে পানির নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
স্থানীয় বাবর মাহমুদ বলেন, ‘ভারী বর্ষণে বিল পুরোপুরি জলমগ্ন। পুকুর খননের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফসলি জমি এবং কৃষকরা চরম দুর্ভোগে আছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবণী বলেন, ‘বর্ষণের কারণে অনেক জায়গায় ধানের জমিতে পানি জমেছে, তবে পানি নেমে গেলে ধানের ক্ষতি খুব বেশি হবে না।’ তবে কত হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে তার নির্দিষ্ট হিসাব বর্তমানে নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল-কলেজে পাঠদান বিঘ্নিত হতে পারে। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া আমন ধান রক্ষায় কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ ও কার্যকর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, না হলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমও দীর্ঘদিন বিঘ্নিত থাকবে।