ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

বাঘাইছড়িতে জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০৩:৫০ পিএম
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সর্বস্তরের মানুষ ও বিভিন্ন পেশা শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন । ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

“পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রকল্পে জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে বাঘাইছড়িতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‎বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে  মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ ও বিভিন্ন পেশা শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

‎প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মুক্তার হোসেন সোহেল এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান।

‎প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম। প্রধান বক্তা ছিলেন বাঘাইছড়ি পৌর শাখার সভাপতি মো. মহিউদ্দিন।

‎এ ছাড়া মো. ইলয়াস, নুরুজ্জামান, রাফসান হোসেন মাসুদসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী, সাধারণ জনগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

‎বক্তারা অভিযোগ করেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বাঘাইছড়িবাসীর প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে উপজাতীয় গোষ্ঠীর মধ্যে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে লুটপাট করা হচ্ছে।

‎বক্তারা উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, সাজেকের উদয়পুর এলাকায় কফি ও কাজু বাদাম চাষের নামে প্রায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে সাড়ে চার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, অথচ বাস্তবে সেখানে ওই সংখ্যক উপকারভোগী নেই। এছাড়া সাজেক ইউনিয়নে ১টি ঘর, ১টি টিউবওয়েল এবং সাড়ে চারশ মেট্রিকটন সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে-যা বক্তাদের মতে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক।

‎তারা আরও বলেন, বাঘাইছড়ির সারোয়াতলী, বঙ্গলতলী ও রূপকারী ইউনিয়নের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকাগুলো দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। রাস্তা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো-কোনো ক্ষেত্রেই বাঙালিদের জন্য দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি।

‎বক্তারা অভিযোগ করেন, তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও বাঘাইছড়ি পৌর এলাকায় রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা পাবলিক টয়লেটের মতো মৌলিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেখা যায় না, অথচ পৌর প্রশাসন প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা কর আদায় করছে।

এ ছাড়া দেশের বৃহত্তম উপজেলা হওয়া সত্ত্বেও বাঘাইছড়িতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডে কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে বক্তারা জানান।

‎সভায় আরও অভিযোগ করা হয়, পাহাড়িদের একটি চাকরি কল্যাণ সমিতিকে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে-যার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বক্তারা। তারা বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই প্রকল্পের টাকা প্রত্যাহার না করা হলে জেলা পরিষদের সদস্য দেবপ্রসাদ দেওয়ানকে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।