রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় নিজের বাড়িতে এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর গ্রামে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি নিহত দম্পতির শোকার্ত পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে কী রহস্য লুকানো আছে, কারা দায়ী এবং কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা খুঁজে বের করা হোক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করবো, দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। আমি এটি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এটি শুধু তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জের বিষয় নয়; সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েও উদ্বেগ দেখা দেবে।’
ঘটনার দিন সকালেই প্রতিবেশীরা বাড়ির বাইরে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ডাইনিং রুমে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় এবং রান্নাঘরে তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে তারা পুলিশকে খবর দেন।
যোগেশ চন্দ্র রায় সরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং ২০১৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তাদের দুই ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকায় দম্পতি গ্রামের বাড়িতে থাকতেন।
পরিস্থিতি দ্রুত খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ক্রাইমসিনে আলামত সংগ্রহ ও সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্নের পর দুপুর তিনটায় নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন বলেন, ‘পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। সুরতহালও সম্পন্ন করা হয়েছে। সব বিষয় বিবেচনায় রেখে খুব দ্রুত হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।’



