শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আবু শামা, কুবি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম

গুচ্ছের যাঁতাকলে এক সেশনেই ১১৮ শিক্ষার্থী হারিয়েছে কুবি

আবু শামা, কুবি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

আশা-প্রত্যাশার পারদ নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে শুরু হয় সমন্বিত (গুচ্ছ) ভর্তি পরীক্ষা। বর্তমানে এর সংখ্যা ২৪টি। তবে গুচ্ছের যাঁতাকলে পড়ে শিক্ষার্থী হারাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, প্রতি বছর ১ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যথাসময়ে ক্লাস শুরু করলেও বছর শেষে আসন খালি রেখে পাঠদান চালিয়ে যেতে হয় বিভাগগুলোকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হয় ১ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী। তবে বছর না পেরোতেই হারাতে হয়েছে ১১৮ জন শিক্ষার্থীকে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করেছে বলে জানা গেছে৷ এ ছাড়াও ৪১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসির মূল সনদপত্র উত্তোলন করার পর নির্ধারিত সময়েও জমা দেয়নি বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার দপ্তর৷ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা সনদপত্র উত্তোলন করেছেন তারা হয়ত কোথাও না কোথাও ভর্তি হয়েছে।

রেজিস্ট্রার দপ্তরের সূত্র মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত, রসায়ন ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ার বিভাগে ৮ জন; ফামের্সী বিভাগে ৭ জন; নৃবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ৬ জন; পরিসংখ্যান ও একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে ৪ জন; পদার্থ, ইংরেজি, অর্থনীতি, আইসিটি বিভাগে ৩ জন; মাকের্টিং বিভাগে২ জন; বাংলা, লোক প্রশাসন ও অর্থনীতি বিভাগে ১ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করেছে।

সনদ জমা না দেয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সনদ উঠিয়ে জমা দেয়নি রসায়ন বিভাগের ৮ জন, গণিত ৬ জন, বাংলা, নৃবিজ্ঞান ৪ জন পদার্থ, পরিসংখ্যান ৩ জন, লোক প্রশাসন, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ও মাকের্টিং বিভাগে ২ জন, প্রত্নতত্ত্ব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ার, আইসিটি, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ ও ইংরেজি বিভাগের ১ জন করে শিক্ষার্থী।

ভর্তি বাতিল ও সনদ জমা না দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের স্বকীয়তা হারিয়েছে। সারা বছর ভর্তিপ্রক্রিয়া চালু থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে, সে বিষয়ে মন স্থির করতেই পারে না। ফলে শিক্ষার্থীরা এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। এতে আসন ফাঁকা থাকা অবস্থায় কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয় কুবিকে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এটা তো বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি পরিবেশ, যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হবেন। এক জায়গায় থাকবেন। তাদের মধ্যে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির ভাবের বিনিময় হবে। এখানে মনের সঙ্গে মনের দ্বন্দ্ব, জ্ঞানের সঙ্গে জ্ঞানের সংঘর্ষে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হবে। পুরোনো জ্ঞানের চুলচেরা বিশ্লেষণ, পরিমার্জন, পরিবর্ধন ও পরিবর্তন হবে। কিন্তু সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন, কৃষ্টি-কালচার, ভাষা, পোশাক এবং সহনশীল মনোভাব তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

জান্নাতুল নাইম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার মূল কাজ দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। কিন্তু জেলায় জেলায় যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা হয়েছে সেখানকার শিক্ষার্থীদের পড়ানোর মতো দক্ষ শিক্ষক ও প্রশিক্ষিত জনবল দরকার। কিন্তু এসব না থাকলে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা প্রত্যাশার সিকিটুকুও পূরণ করতে পারছে না বলে মনে করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড মোহাম্মদ জাকির সাঈদ উল্লাহ। তিনি বলেন, যতটুকু আশা নিয়ে গুচ্ছ পরীক্ষা শুরু করছিল তার কিছুই হয়নি। বরং সবকিছু আরও জটিল হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আসন খালি থাকা নিয়ে আমরা কনসার্ন আছি। কিন্তু গুচ্ছের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। শুধু এ বছর না, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন খালি থাকছে। এ বিষয়ে গুচ্ছের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিম খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন খালি থাকা দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। গুচ্ছের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলতেছে। তদন্ত আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই আমরা পদক্ষেপ নেবো।

আরবি/ এইচএম

Shera Lather
Link copied!