ভালোভাবেই আকাশে উড়ছিল বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমানটি। ১২ মিনিটের মাথায় সেটি আছড়ে পরে উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ প্রাঙ্গনে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় উড়োজাহাজটিতে। এ ঘটনায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হলো সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিমানটি ১টা ৬ মিনিটে আকাশে উড়ছিল। ১২ মিনিটের মাথায় সেটি বিধ্বস্ত হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, উত্তরা দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ক্যাম্পাসে যখন আছড়ে পরে বিমানটি তখন ওই ভবনে প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল। বিমানটি কলেজের ক্যানটিন ভবনের ওপরে বিধ্বস্ত হয়। সেই ভবনটিতে প্রায় দেড়শ জন শিক্ষার্থী ছিলেন।
মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) বুলবুল আহমেদ জানান, ঘটনার সময় তাদের প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। বিকট শব্দে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। শিক্ষকরা অনেককেই নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। তবে হতাহতের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি তিনি।
তবে জানা গেছে, প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হতে থাকে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিধ্বস্ত ভবনের পাশে আগুন জ্বলছে এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলি আকাশে উঠছে। আতঙ্কিত মানুষজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছেন। ভবন থেকে পোড়া শরীর নিয়ে দৌড়ে বের হতেও দেখা গেছে অনেককে। সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে অনেককে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এফ সেভেন বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটিতে পাইলট ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। এখনও তার খোঁজ মেলেনি। তৌকির ইসলাম ছিলেন বিমান বাহিনীর একজন তরুণ প্রশিক্ষণ পাইলট।
দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। হতাহতদের হেলিকপ্টারে করে ঢাকা সিএমএইচে (সামরিক হাসপাতাল) নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে বিমান বিধ্বস্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা সন্তানদের খোঁজে কলেজে ছুটে আসেন। কেউ বা হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ছুটে যান।
ভয়াবহ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কত জন মারা গেছেন সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ঠ কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এ ঘটনায় আগুনে ঝলসে গেছে স্কুলটির বেশ কয়েকটি শিশু। এমনকি কলেজের ক্যানটিন রুমে যে শিক্ষার্থীরা ছিল তাদের এখনও কাউকে বের করা সম্ভব হয়নি। নিহতের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জন হতে পারে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, ঘটনাস্থলে তাদের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
আপনার মতামত লিখুন :