গোপালগঞ্জে জুলাই পদযাত্রায় নিষিদ্ধ সংগঠনের হামলায় আহত হয় এনসিপির নেতাকর্মীসহ পুলিশ সদস্যরা। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজপথ। আত্মরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয় যৌথ বাহিনী। তারপর সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয় সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ছাত্রলীগের ৪ কর্মী, যদিও উল্লেখযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এমনকি, নিহত হওয়া ৪ জনের মধ্যে একজন রমযান কাজী যিনি মারাই যাননি। তার ছবি ও নাম ব্যবহার করে গুজব ছড়িয়েছে ছাত্রলীগ। এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনও করেন রমযান কাজী।
সেদিনের ঘটনায়, সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন লাইভ ও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যৌথ বাহিনী কোথাও মরণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। তবে পুলিশ আত্মরক্ষায় টিয়ার শেল বা কাঁদানো গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এদিকে, আইএসপিয়ার থেকে বিবৃতি দিয়েও জানানো হয়, গুজব বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ধৈর্য ধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রথমত, সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত, নাকি কিলিং মিশন তা জানার জন্য প্রয়োজন ময়না তদন্তের। কিন্তু চারজনের কারোরই কোনো সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করতে দেয়নি স্থানীয়রা। এমনকি, কোনো মামলাও করা হয়নি বিচারের দাবিতে। এখানেই দানা বাঁধে সন্দেহের।
এবার নির্ভরযোগ্যে সূত্রে, উঠে আসে ভয়ংকর চিত্র। গোপালগঞ্জ হলো আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এটা শুধু একটা জেলা না, বরং একটা লুকায়িত প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর হোম গ্রাউন্ড। প্রশিক্ষিত মিলিট্যান্টরা এখানে ঘরে ঘরে অস্ত্র রাখে। অস্ত্র সরবরাহ করা হয় কুষ্টিয়ার আলম ডাঙ্গাতে।
এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে এই মিলিশিয়া বাহিনী প্রস্তুতি নেয় গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের হত্যা করতে। এই জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য তিন দিনব্যাপী একটা ট্রেনিং ক্যাম্পও করে তারা। কিন্তু সমাবেশের দিন তাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তী নষ্ট করতে করা হয় ভিন্ন পরিকল্পনা। হাসিনার নির্দেশে মিলিশিয়া বাহিনী টার্গেট করে কয়েকজন তরুণদের ধরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে তারপর চালিয়ে দেয় সেনাবহিনীর নামে।
সূত্র বলছে, এই হত্যাযজ্ঞের পেছনের মাস্টারমাইন্ড নাকি দিল্লি পলাতক শেখ হাসিনা। পুরোটা সময় হাসিনা নাকি কমান্ডারের সাথে ফোন কলে ছিল।
গোপালগঞ্জের ঘটনায় যে চারজন মারা গেছে, তা নিতান্তই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি পৈশাচিক ষড়যন্ত্র অভিযোগ এনেছেন বিশেষজ্ঞরা ।
গতবছর এক গণহত্যা চালিয়ে নিজের কর্মীদের ফেলে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আজ সেই এক বছর পরে এসেও একই কায়দায় নিজের গ্রামের লোকদের হত্যা করে রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করার উদ্দেশ্য।
গোপালগঞ্জের ঘটনাগুলো কি নিছক রাজনৈতিক সহিংসতা, নাকি এর আড়ালে রয়েছে প্রশিক্ষিত দলীয় কমান্ডোদের ভয়ংকর এক মিশন? এই প্রশ্ন এখন স্রেফ গুঞ্জন নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। তদন্ত হবে কি না, সত্য বের হবে কি না তা সময়ই বলবে। তবে একটি কথা নিশ্চিত, গোপালগঞ্জ এখন শুধুই রাজনীতি নয়, এক রহস্যময় ‘ক্রাইম জোন’।
আপনার মতামত লিখুন :