দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এখনো জুন মাসের বেতন পাননি।
বেতন ছাড়ে বিলম্বের পেছনে তিনটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে আগামীকাল বুধবার বেতন পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার-৫ মো. জহির উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীরা নিয়মিত ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) সুবিধা পেলেও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য প্রতি মাসে আলাদা অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এ জন্য ইএফটি ব্যবস্থায় তাদের নিয়মিত বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইএমআইএস-এর এক কর্মকর্তা জানান, তিনটি কারণে বেতন বিলম্বিত হয়েছে—শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যথাসময়ে বেতনের প্রস্তাব (বিল) পাঠানো হয়নি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিতে জিও জারি এবং অনুমোদন বিলম্বিত হয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর জটিলতায় প্রতি মাসে নতুন করে বিল প্রস্তাব পাঠাতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ এবং দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়।
জানা গেছে, ২৯ জুন মাউশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেতনের প্রস্তাব পাঠায়। তবে প্রায় ১০ দিন ধরে সেটি অনুমোদন না হওয়ায় প্রক্রিয়া থেমে ছিল। ১০ জুলাই জিও (সরকারি আদেশ) জারি হলেও তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (এজি অফিস)-এ পৌঁছাতে আরও তিন দিন সময় লেগেছে।
১৪ জুলাই (সোমবার) জিও পাঠানো হয় এজি অফিসে। এরপর আজ সন্ধ্যা বা আগামীকাল বুধবার (১৬ জুলাই) বেতন ছাড় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ইএফটি পদ্ধতিতে দেওয়া হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী এ সুবিধা পান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।
তবে এখনো সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে অটোমেশন হয়নি, যার ফলে শিক্ষকরা অনিয়মিতভাবে বেতন পাচ্ছেন এবং ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতির ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :