জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় কেউ যেন হাত দিতে না পারে’, সেজন্য সংবিধানে শক্তিশাল সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সংশোধনীটা শক্তিশালী করতে চাই; ভবিষ্যতে যেন কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় হাত না দিতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় কেউ যদি পরিবর্তন আনতে চায়, সেটাও গণভোটের মাধ্যমে করার প্রস্তাব দিয়েছি। আর কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না বিএনপি’।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিএনপির নেতারা।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আলোচনা ছিল দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট নিয়ে। উচ্চকক্ষ ও নি¤œকক্ষে কীভাবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন রকমের মতামত থাকায় ঐকমত্য হয়নি। দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট গঠনের বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই একমত। কিন্তু এর গঠন প্রক্রিয়া কী হবে এবং এর ক্ষমতা ও কার্যাবলি কী হবে, তা নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ আছে’।
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বিএনপির ৩১ দফার ভিত্তিতে দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট সৃষ্টির প্রস্তাব করেছিলাম। দেশের বিভিন্ন খাতের বিশিষ্টজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী এবং জাতি গঠনে যাদের
অবদান আছে, তাদের নিয়ে এটা করা যায় কি না। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কথাও আছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যমান সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসন যেভাবে নির্ধারণ হয়, সেভাবে উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হচ্ছে। তবে বিষয়টা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। কেউ চান পিআর পদ্ধতিতে, মানে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে। এখানে আবার পাওয়ার ফাংশনের বিষয় আছে। সাধারণ বিল কীভাবে পাস হবে, সংবিধান সংশোধন হলে আপার হাউসে কীভাবে পাস হবে, ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও ঐকমত্য আসেনি। তবে কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতি চায় না বিএনপি’।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের প্রয়োজন আছে কি নাÑ সেই প্রশ্ন অনেক দল তুলেছে। আমাদের দেশের যে আর্থিক সক্ষমতা, সেই বিষয়ে আরেকটি পার্লামেন্ট সৃষ্টি করা এবং সেই পার্লামেন্ট যদি নি¤œপক্ষের রিপাবলিক হয়, তাহলে সেটার প্রয়োজন আছে কি নাÑ সেসব প্রশ্ন এসেছে। কারণ এটাও একটা আলাদা পার্লামেন্টের মতো ব্যয়বহুল পার্লামেন্ট হবে। এসব বিষয়ে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন সবার মতামত নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত দেবে আগামী রোববার। সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর আমরা প্রতিক্রিয়া বা আমাদের সম্মতি বা অসম্মতি জানাতে পারব’।
আপনার মতামত লিখুন :