মিয়ানমারে নিষিদ্ধ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম-ইন্ডিপেন্ডেন্ট (উলফা-আই)-এর পূর্ব সদরদপ্তরে ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
রোববার (১৩ জুলাই) নিষিদ্ধ ঘোষিত উলফা-আই দাবি করেছে, মিয়ানমারে তাদের পূর্ব সদরদপ্তর ভোরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নিষিদ্ধ সংগঠনটির এক বিবৃতির বরাতে জানায়, সীমান্তবর্তী এই হামলায় তাদের ১৯ জন ক্যাডার নিহত এবং আরও ১৯ জন আহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হামলায় উলফা (আই)-এর সিনিয়র কমান্ডার নয়ন মেধিসহ মণিপুরী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কিছু ক্যাডার নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রেভোলিউশনারি পিপলস ফ্রন্ট (আরপিএফ), যা ক্যাম্পে উপস্থিত মণিপুরের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রাজনৈতিক শাখা নিহত। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
তবে, এক সরকারি বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এই দাবিগুলো অস্বীকার করেছে। গুয়াহাটির প্রতিরক্ষা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে বলেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এই ধরণের অভিযানের কোনও তথ্য নেই।’
উলফা (আই)-এর প্রধান পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন সংগঠনের সিনিয়র নেতৃত্ব এখন ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু। নয়ন মেধির মৃত্যুর পর মিয়ানমারে অবস্থানকারী একমাত্র সিনিয়র নেতা হিসেবে রয়েছেন অরুণোদয় দোহোটিয়া। আরেক সিনিয়র কমান্ডার রূপম অসমকে গত মে মাসে আসাম পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সূত্র জানায়, পরেশ বড়ুয়া বর্তমানে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এছাড়াও তিনি চীন-মিয়ানমার-ভারত (অরুণাচল প্রদেশ) সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিদ্রোহী কার্যক্রমের দিক থেকে তিনি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা আইএএনএস-কে জানান, উলফা (আই) সদর দপ্তরে এই হামলাগুলো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে তাতমাদাও (মিয়ানমারের সেনাবাহিনী)-এর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় উলফা (আই)-সহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে ঘাঁটি গেঁড়ে রেখেছে। এই সীমান্ত অঞ্চল ভারতে নিরাপত্তা হুমকির একটি গুরুতর উৎস হয়ে উঠেছে।
২০২৫ সালের মে মাসে, মণিপুরের চান্দেল জেলায় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এক সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন জঙ্গি নিহত হয়। এই ধরনের সংঘর্ষ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জটিল করে তুলছে।
আপনার মতামত লিখুন :