তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তার মোড়ে অবস্থিত বাইতুল আমান মাদ্রাসা। সেই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে পড়তেন ১২ বছরের সাব্বির হোসেন। গত ১৬ আগস্ট ছুটি কাটিয়ে মামা মাহাদী হাসানের সঙ্গে মাদ্রাসায় ফিরে সাব্বির। ফেরার দিনই মামা ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের মিথ্যা বলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায় সে। বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার হদিস মেলেনি।
মামা মাহাদী হাসান জানান, ‘গত শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে ছুটি কাটিয়ে আমার সঙ্গে মাদ্রাসায় ফিরে সাব্বির। মাদ্রাসার শিক্ষকসহ একসঙ্গে কথা বলছিলাম আমরা। এ সময় টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে উঠে যায় সে। দীর্ঘক্ষণ পার হলেও ফিরে না আসায় সন্দেহ হয়। এরপর পুরো মাদ্রাসা খুঁজেও তাকে পাইনি। আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও খুঁজেছি, কিন্তু তার আর সন্ধান মেলেনি।’
নিখোঁজ সাব্বির হোসেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনও তার খোঁজ মেলেনি। কোনো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও যায়নি সে। এমন অবস্থায় দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সাব্বিরের পরিবার।
সাব্বিরের বাবা সোহেল মিয়া জানান, ‘সাব্বির আমার একমাত্র ছেলে। ইচ্ছে ছিল তাকে কোরআনের হাফেজ বানাবো। তাই ছোটবেলা থেকেই তাকে মাদ্রাসায় দিয়েছি। কিন্তু কী এমন হলো, কেন পালিয়ে গেল আমরা কেউ বুঝতে পারছি না। কোথায় গেল আমার ছেলে, ওর চিন্তায় আমরা অস্থির হয়ে আছি। ছেলেটাকে হারিয়ে তার মা পাগলপ্রায়। কিছু খাচ্ছে না, ঘুমাচ্ছে না। শুধু সাব্বিরের অপেক্ষায় দিন গুনছে, কখন সে বাড়ি ফিরবে।’
এ বিষয়ে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন নিখোঁজ সাব্বিরের মা আছমা আক্তার। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ সাব্বিরকে খুঁজে পেতে চেষ্টা চলছে। তবে সাব্বিরের কাছে ফোন না থাকায় তাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
নিখোঁজ সাব্বিরকে খুঁজে পেতে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন তার পরিবার। কোথাও খুঁজে পেলে মাদ্রাসা বা থানায় যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন