সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর র্যাঙ্কিংয়ে প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) এর 'ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে ২০২৬'-এর র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পায়নি স্বাধীন বাংলাদেশে স্থাপিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এই টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই)-এর তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের মোট ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে, যার অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কয়েক যুগ পরে।
তালিকাটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এর মধ্যে ১৯টি সরাসরি র্যাঙ্কিং এবং বাকি ৯টি রিপোর্টার হিসেবে তালিকায় নাম এসেছে। তবে সবগুলোর অবস্থান ৮০০-এর পরে। তালিকার প্রথমেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজিপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
তালিকায় ২০০৭ সালের ২৫শে জানুয়ারী প্রতিষ্ঠিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে ১০০১ থেকে ১২০০ এর মধ্যে। ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বরে প্রতিষ্ঠিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থান পেয়েছে ১২০১ থেকে ১৫০০-এর মধ্যে। কিন্তু তালিকায় স্থান হয়নি ১৯৮২ সালে, যাত্রা শুরু করা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের।
এ ছাড়াও রিপোর্টার হিসেবে তালিকায় নাম আসা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
জার্মানির ইরাসমাস প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া ইবি শিক্ষার্থী মুস্তাকিম পিয়াস বলেন, টাইমস হায়ারের মতো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ের তালিকার অবশ্যই একটি গুরুত্ব রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, একই রেজাল্ট নিয়ে ভিন্ন দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্কলারশিপের আবেদন করলে যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এটি ভূমিকা রাখে। র্যাঙ্কিংয়ে নাম না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবেদন রিজেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার দেশের ভেতরেও চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, ইবিতে আন্তর্জাতিকিকরণের কথা মুখে বারবার বলা হলেও বাস্তবে অগ্রগতি খুব একটা হয়নি। গবেষণার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খুব কম ফান্ড দেওয়া হয়, যাও বা দেওয়া হয় তাও যথাযথভাবে ব্যবহার করে না। একটি দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে প্রশাসনকে আগাতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা গবেষণায় উৎসাহী হয়। নূন্যতম সম্মানি দিয়ে হলেও রিসার্চ ক্লাবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করাতে হবে। এটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের জন্য যেমন প্রয়োজন তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্যও সহায়ক। এভাবে সফলতা পাওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থী-শিক্ষকের অনুপাত, গবেষণার মান, সাইটেশন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ কয়েকটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে র্যাঙ্কিং করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন'। এবারের র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩ হাজার ১১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়েছে। শীর্ষে আছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) এবং তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।