ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালো জাদু, যা বিভিন্ন সংস্কৃতিতে কুফরি কালাম, তন্ত্রমন্ত্র বা বাণ মারা নামেও পরিচিত। এটি মানব সভ্যতার আদিকাল থেকেই চর্চিত হয়ে আসছে।
এটি মূলত এমন এক ধরনের চর্চা যা অন্যের ক্ষতি সাধন বা নিজের স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে অতিপ্রাকৃতিক বা অশুভ শক্তির ব্যবহারকে বোঝায়। যদিও এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই, তবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আজও এর বিশ্বাস ও চর্চা প্রচলিত আছে।
ব্ল্যাক ম্যাজিক বলতে সাধারণত সেইসব ক্রিয়াকলাপকে বোঝানো হয় যেখানে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার জন্য বিশেষ মন্ত্র, আচার-অনুষ্ঠান, প্রতীক বা উপাদান ব্যবহার করা হয়।
যারা এই ধরনের চর্চা করেন, তাদের কালো জাদুকর বা জাদুকরনী বলা হয়। ধারণা করা হয়, কালো জাদুর মাধ্যমে ভূত, প্রেত, আত্মা বা অশুভ জিন বশ করে তাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হয়।
এর মূল উদ্দেশ্য থাকে অন্যের ক্ষতি করা, সম্পর্ক নষ্ট করা, রোগ সৃষ্টি করা, আর্থিক ক্ষতি ঘটানো বা কোনো ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা।
যেভাবে ব্ল্যাক ম্যাজিক করা হয়
ব্ল্যাক ম্যাজিকের চর্চায় বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহৃত হতে পারে, যেমন: পুতুল, মূর্তি, পাখি, মাছ, ছাগল ইত্যাদি প্রাণী। যাকে লক্ষ্য করে জাদু করা হয়, তার ব্যবহৃত পোশাকের অংশ, চুল, নখ বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত জিনিসও ব্যবহৃত হতে পারে।
বিভিন্ন তাবিজ-কবচ বা নির্দিষ্ট মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে কার্যসিদ্ধি করা হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে, কাক, প্যাঁচা বা ডাহুক-জাতীয় পাখির শরীরে বা মাছের পেটে এসব তাবিজ ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আসা হয়।
আধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ব্ল্যাক ম্যাজিকের কোনো অস্তিত্ব নেই। একে মূলত কুসংস্কার, মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বা মানুষের অন্ধবিশ্বাস হিসেবে দেখা হয়।
অনেক সময় প্রতারকরা ব্ল্যাক ম্যাজিকের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে।
তবে, কিছু সংস্কৃতিতে বা লোকবিশ্বাসে ব্ল্যাক ম্যাজিকের প্রভাবকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয় এবং এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষেধক বা সুরক্ষা পদ্ধতিরও প্রচলন আছে।
বিভিন্ন দেশে ব্ল্যাক ম্যাজিক বা জাদুবিদ্যা সংক্রান্ত প্রতারণা বা ক্ষতির জন্য আইন রয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে দেখা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :