ঢাকা বুধবার, ২১ মে, ২০২৫

খুলনায় নৌবাহিনীতে চাকরির নামে প্রতারণার ফাঁদ, গ্রেপ্তার ৯ 

খুলনা ব্যুরো
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৫, ১০:০১ পিএম
খুলনায় প্রতারক ও দালাল চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে নৌবাহিনী। ছবি-সংগৃহীত

খুলনায় নৌবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের চুক্তির অভিযোগে প্রতারক ও দালাল চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) গভীর রাতে নগরের সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে নৌবাহিনী সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে চাকরি প্রার্থীদের স্বাক্ষরিত চেক বই, ফাঁকা স্ট্যাম্প, মোবাইল ফোন, নৌবাহিনীর নাবিক ও এমওডিসি পদের আবেদনপত্র এবং প্রশ্ন-উত্তরপত্রের সেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- দালালচক্রের প্রধান শামীম ইসলাম (৪০), তার সহযোগী আশিকুর রহমান (২১), শাকিল আহমেদ (২০), মো. আলহাজ আলী (১৯), মো. নয়ন আলী (১৯), মো. মুস্তাকিম (১৯), ফরহাদ মণ্ডল (২১), মোহাম্মদ রিয়াজ ইসলাম (১৯) ও মো. আমিরুল ইসলাম (১৯)।

ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের অনেকেই বসতভিটা, আবাদি জমি ও  জমানো অলংকাকারসহ শেষ সম্বল বিক্রি করে টাকা দেন। বিষয়টি বুঝতে না পেরে তারা প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে নগরের সোনাডাঙ্গা থানা চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করে নৌবাহিনীর খুলনা কন্টিনজেন্ট।

নৌবাহিনী খুলনার মিডিয়া সেল জানায়, উল্লিখিত দালালচক্রের সদস্যরা নৌবাহিনীতে নাবিক এবং এমওডিসি পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ৩৮ জন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে চেক এবং ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তারা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন হাফিজনগর এলাকার ‘সুইট প্যালেস’ নামক একটি আবাসিক হোটেলে চাকরি প্রার্থীদের জড়ো করে প্রশিক্ষণের নামে চুক্তিপত্র সম্পাদনের কাজ করছিল। 

জনপ্রতি চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে তারা ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। গোপন খবরের ভিত্তিতে এ তথ্য পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল গত সোমবার গভীর রাতে ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সকালে তাদের সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় হস্তান্তর করে মামলা দায়ের হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সামিউর রহমান খান বলেন, ‘প্রতারক চক্রের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে স্বাক্ষরিত ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক, ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প এবং হোটেলে নিয়ে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন রেখে দেয়।’

এ ছাড়া প্রতারক চক্রের সদস্যরা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য হোটেলেই প্রার্থীদের চোখ পরীক্ষার জন্য কালার ব্লাইন্ড টেস্ট বুক এবং ভুয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে।

তিনি আরও বলেন, ‘নৌবাহিনীতে টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে প্রতারকচক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানাই।’