ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

নিউইয়র্ক কনস্যুলেটের ঘটনায় ব্যাখ্যা দিল বাংলাদেশ মিশন

বাসস
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট বোর্ড। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে গত ২৪ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এ সময়ে সভা প্রাঙ্গণে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মিশনের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত ২৪ আগস্ট (রোববার) বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় দেড় শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের আগেই নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কনস্যুলেটের আশেপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি পণ্ড করার উদ্দেশ্যে এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে সরাসরি আক্রমণ করার হিংস্র মনোভাব নিয়ে বিকাল ৫টা থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের সামনে অবস্থান নেন। তারা বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তারা আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ধাওয়া করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা দেন। সময়ের সাথে সাথে তারা আরও নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করেন, যার অংশ হিসেবে তারা অতিথিদের উদ্দেশ্যে ডিম নিক্ষেপ করেন। অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের প্রবেশপথের পার্শ্ববর্তী অন্য একটি অফিসের (একই ভবনের) কাচের দরজায় আঘাত করে, যার প্রেক্ষিতে ওই দরজায় ফাটল ধরে।

বিবরণীতে বলা হয়েছে, পুলিশ দুষ্কৃতিকারীদের এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। দুষ্কৃতিকারীদের ন্যাক্কারজনক এই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে ইতোমধ্যে পুলিশের হস্তগত হয়েছে এবং তারা এই ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

তথ্য বিবরণীতে আরও বলা হয়েছে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা প্রধান অতিথিকে হেনস্তা করা ও জীবননাশের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাসহ কনস্যুলেট জেনারেলের চতুর্দিকে মধ্যরাত অবধি অবস্থান করেন। তবে পুরো সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষণীয় ছিল।

উল্লেখ্য, প্রধান অতিথি যথাসময়ে নির্ধারিত পথে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। প্রাণবন্ত মতবিনিময়, আগত অতিথিবৃন্দের সাথে কুশল বিনিময় এবং রাতের খাবার শেষে প্রধান অতিথি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই নির্ধারিত গাড়িযোগে তার গন্তব্যে পৌঁছান। প্রধান অতিথি চলে যাওয়ার পরে পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে।

দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল ইতোমধ্যে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে চিঠি পাঠিয়েছে।

এখানে আরও উল্লেখ্য যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আগমন কিংবা প্রস্থানের সময় দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে উপদেষ্টার কোনো ধরনের সাক্ষাৎ বা দূরতম কোনো সংযোগ কিংবা সংশ্লেষও ঘটেনি। তারা শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেননি। উদ্দেশ্য সাধনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তারা নানাবিধ অপতথ্য এবং প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন।

এই ধরনের মিথ্যা তথ্য এবং প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হতে মিশনের পক্ষ থেকে সকলকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।