রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার : আইন উপদেষ্টা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে দিকনির্দেশনা দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে দিকনির্দেশনা দিতে না পারলে এ বিষয়ে সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সোমবার (৩ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, সরকার ইতিমধ্যে একাধিকবার আলোচনার আয়োজন করেছে। এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের উদ্যোগে বসে ঐকমত্যে পৌঁছানোর। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই।

তিনি আরও বলেন, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তারা গত ১৫ বছর ধরে একসঙ্গে সংগ্রাম ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমরা আশা করি, তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দিতে পারবেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, ইতোমধ্যে একটি রাজনৈতিক দল আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে এবং সরকার সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছে তা সরকারকে জানাতে বলা হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করব। এরপর অবশ্যই সরকার সরকারের মতো অ্যাক্ট করবে, বলেন তিনি।

এর আগে সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে আসিফ নজরুল জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়নসংক্রান্ত বিষয়ে আজকের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জানানো হয়।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ঘোষণা আসতে পারে আজই

বিস্তারিত পড়ুন

সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ, গণভোট আয়োজন এবং এর বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে দেখা যায়, সংস্কার বিষয়ে কিছু সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে, বিশেষ করে গণভোটের সময় ও বিষয়বস্তু নিয়ে।

এই প্রেক্ষাপটে সভায় বলা হয়, গণভোটের সময়সূচি ও বিষয়বস্তু নির্ধারণে দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমরা চাই, এই সিদ্ধান্তটা হোক রাজনৈতিক ঐক্যের ভিত্তিতে।

সভায় আরও জানানো হয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকারের সংকল্প অপরিবর্তিত রয়েছে।