শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম

মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র-চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

লাল সবুজের দেশ বাংলাদেশ। স্বাধীনতা মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ। স্বাধীনতার জন্য পৃথিবীর প্রতিটা জাতিকে কমবেশি রক্ত দিতে হয়েছে। জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা বা বাস্তবচিত্র নিয়ে কিছু চলচ্চিত্র হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ‘জীবন থেকে নেয়া’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে, যা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এটাই প্রথম মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র। আমিও মনে করি, জীবন থেকে নেয়া-ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রথম ধারণ করে লালন করে শাসক-শোষকের বিরুদ্ধে রুপকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ‘একটি চাবির গোছা’ এ ছবির মূলমন্ত্র।

এ চাবির গোছাকে তখনকার স্বৈরশাসকের চরিত্র বোঝানো হয়েছে এবং তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে এই প্রথম ‘আমার সোনার বাংলা’কে সংগীত হিসেবে উপস্থাপন করে। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে যা জাতীয় সংগীত হিসেবে স্থায়ী হয়। আমি তো মনে করতেই পারি ‘জীবন থেকে নেয়া’ প্রথম মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র। এ ছবিতে আছে একটি কালজয়ী গান ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ যা মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে আন্দোলনে প্রধান সংগীত হিসেবে বিখ্যাত হয়। ‘ওরা ১১ জন’ মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ছবি-পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সম্মুখযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

ওই ছবির সবচেয়ে হৃদয়বিদারক অংশ হচ্ছে চিত্রনায়িকাকে (নতুন) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে বন্দী করে রেখে ধষণ করে। যখন (নতুন) ধর্ষিতা নারী বন্দিশালা থেকে বের হয়ে আসে নায়ক খসরু যখন তার সামনে যায়- তখন দুইজনার মাঝে যে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়, তা সিনেমা হলে দর্শক দেখে এত আবেগপ্রবণ হয়ে যায়, তারা নিজেদের ঠিক রাখতে পারে না। সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে যায় কাঁদতে কাঁদতে। সত্যি এই দৃশ্যে কোনো মানুষই নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। আজও ওই চলচ্চিত্রের চিত্রায়ণ, সংলাপ, সংগীত নিয়ে আলেচনা হয়। ওরা ১১ জন পরিপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের ছবি।

হাঙ্গর নদী গ্রেনেড

সেলিনা হোসেনের উপন্যাস নিয়ে চাষী নজরুল ইসলাম এ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ওই চলচ্চিত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য, যা মানুষকে নাড়া দিয়েছে। কিছু মুক্তিযোদ্ধা সুচরিতা (মা)-এর বাসায় আশ্রয় নেয়। পাকহানাদার খোঁজে। সুচরিতার বাসায় যে মুক্তিযোদ্ধা লুকিয়ে আছে, তাদের বের করে দেওয়ার জন্য হুমুক দেয়। সুচরিতা ঘরে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রেখে- নিজের ওরসজাত প্রতিবন্ধী সন্তানকে দেয়। তাকে ভাবে আমার সন্তান যদি মুক্তিযুদ্ধে যায়, কিছুুই করতে পারবে না। মারাই যাবে। সিদ্ধান্ত নেয় নিজের সন্তানকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে খান সেনাদের সামনে তুলে ধরবে। সেই সন্তানকে নিয়ে গিয়ে পাকহানাদার বাহিনীর সামনে তুলে ধরে। পাকহানাদার বাহিনী সুচরিতার (মা) সামনে গুলি করে মারে। পাকহানাদার বাহিনী যখন গুলি করে, তখন মা সুচিরতা কোনোরকম রিয়েকশন দেয় না। পাকহানাদার বাহিনী চলে যায়। সুচিরতা তখন তার মৃত সন্তানকে নিয়ে হৃদয়বিদারক কান্না করে, এমনভাবে অভিনয় করে তখন দর্শকরা নিজেদের ধরে রাখতে পারে না।
আবার তোরা মানুষ হ

মুক্তিযুদ্ধের পর- মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কর্ম না থাকায় বিভিন্ন অপকর্ম জড়িয়ে পড়েন। এ চলচ্চিত্র শিক্ষক খান আতা তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের আদেশ-উপদেশ-নির্দেশ দেয়, তাদের দিনের পর দিন তোমাদের এখন কাজগুলো দেশ গড়ার, সমাজ গড়ার মানুষ গড়ার। তোমরা জাতির ভবিষ্যৎ। তোমরা দেশ স্বাধীন করেছো, তোমরা দেশ এনে দিয়েছো। তোমরা যদি বিপথে যাও তাহলে দেশ কে গড়বে। মানুষ কে গড়বে। তোমাদের দেশকে গড়তে হবে। মানষুকেও গড়ে তুলতে হবে। বিপথগামী মুক্তিযোদ্ধারা সত্য, দেশ এবং মানুষ গড়ার জন্য তারা নিজেদের পরিবর্তন করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করে।

৫৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের এ কথা লিখতে গিয়ে নিজের সম্মুখযুদ্ধের কথা মনে পড়্ িেবরল দিনাজপুরের এক গ্রামে তখন আমরা খানসেনাদের সঙ্গে সামনাসামনি যুদ্ধে। অনেক দিন টানা যুদ্ধ চলছে আমাদের, খাবার পানিও শেষ। সবাই পানির জন্য হাহাকার করছিল। কে যাবে পানি আনতে? আমি বললাম আমি গিয়ে নিয়ে আসি। ওয়াটার বোতল নিয়ে ক্রলিং করে ধানিজমির ভেতর দিয়ে জমির আইলের পাশ দিয়ে নিজেকে আড়াল করে- পানি নিয়ে নিয়ে আবার ক্রলিং করে আসার সময় পাকসেনারা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করে আমি একটু উঁচুতে পড়ার সবাই মনে করেছে আমার গুলি লেখেছে, আমি মারা গেছি- পরে এই বৃষ্টির মতো গুলির সঙ্গে ক্রল করে ধানখেতের ভেতর দিয়ে অনেক কষ্টে আমার সাথী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছায়।

এখন আমাকে জীবিত দেখে, তখন সবাই জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। সবাইকে পানি খাইয়ে আমার তখন মনে হয়েছে, আমার পুনর্জন্ম হয়েছে। আজ এত বছর পর একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার অনুভূতি আমরা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। দেশ স্বাধীন করেছি। নতুন জাতির নতুন দেশ এনে দিয়েছি। সেই দেশকে কোনো সরকারই গড়তে পারেনি, উন্নত করতে পারেনি। আসলে সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের অভাব। এমন নেতার দরকার, যে এই দেশটাকে সোনার দেশ বানাতে পারবে। এই আফসোস আমার মৃত্যু পর্যন্ত থেকে যাবে। একটি কথাই মনে বাজে- ‘রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি।’

মুক্তিযুদ্ধের ছবি

   
ছবির নাম -পরিচালকের নাম-নির্মাণকাল
ওরা ১১ জন-চাষী নজরুল ইসলাম-১১-০৮-১৯৭২
রক্তাক্ত বাংলা-মমতাজ আলী-১৫-১২-১৯৭২
বাঘা বাঙালী-২২-১২-১৯৭২
আমার জন্মভূমি-আলমগীর কুমকুম-২৪-১০-১৯৭২
আবার তোরা মানুষ হ -খান আতাউর রহমান    ৭-১২-১৯৭৩
আলোর মিছিল-নারায়ণ ঘোষ মিতা-২৫-০১-১৯৭৩
সংগ্রাম-চাষী নজরুল ইসলাম    
হাঙ্গর নদী গ্রেনেড-চাষী নজরুল ইসলাম    
অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী-সুভাষ দত্ত    
জয়বাংলা-ফকরুল আলম    
আগুনের পরশমণি-হুমায়ূন আহমেদ    
গেরিলা-নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু    
 

আরবি/জেআই

Shera Lather
Link copied!