চট্টগ্রামে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে হামলার ঘটনায় নারী লাথির ছবি ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের অন্তত ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট মানববন্ধন আয়োজন করেছিল। একই সময়ে সেখানে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের কর্মীরাও উপস্থিত হয়’, এবং একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই উত্তেজনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
আহতদের মধ্যে গুরুতর তিনজন হলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু এবং অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ। তারা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
হামলার সময় এক নারীকে লাথি মারার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়। তার নাম আকাশ চৌধুরী, তিনি সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা। যদিও জামায়াতের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, আকাশ চৌধুরী জামায়াতের কোনো পদে নেই। তবে, আকাশ চৌধুরীর সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগেও আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরের মুরাদপুরে সুন্নিদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।
মানববন্ধনে হামলার ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান বলেন, হামলায় ১৫-১৮ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন এবং শিবির সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলার পর মানববন্ধন বন্ধ করতে বাধ্য হন তারা এবং তাদের ব্যবহৃত ব্যানার ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, শাহবাগবিরোধী মঞ্চের অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, বামপন্থি সংগঠনগুলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করছে এবং তারা এটিএম আজহারের ন্যায়বিচারকে মেনে নিতে পারছে না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু এর আগেই ফেসবুকে নানা উস্কানিমূলক পোস্ট এসেছিল এবং তাদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়েছে।
শাহবাগবিরোধী ঐক্যের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ বলেন, শাহবাগ আন্দোলনের নামে এসব বাম সংগঠন শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ কায়েমে সহযোগিতা করেছিল, এবং এখন তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, তারা এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবেন।
কোতোয়ালী থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা ও হাতাহাতি হয়েছিল এবং পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।