ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

যশোরে হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ০৯:০৩ পিএম
মশিহাটির সুন্দলীতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়। ছবি-রূপালী বাংলাদেশ

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় মশিহাটি সুন্দলী ইউনিয়নে ২০ হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দেশত্যাগের হুমকির প্রতিবাদে এবং দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।

সোমবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পালের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, সহসভাপতি দুলাল চন্দ্র মন্ডল, বিশ্বনাথ মোহন্ত, নকুল চন্দ্র মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু, সাধারণ সম্পাদক নিলয় পাল আদর, সাংগঠনিক সম্পাদক উৎপল ভৌমিক, অর্থ সম্পাদক পল্লব দাস, দপ্তর সম্পাদক সজিব চন্দ্র দাস, গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক শুভজিৎ চক্রবর্তী, নূপুর বসাক প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমসিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদা পাড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি গ্রামে ধর্মীয় উৎসব চলার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার হামলা করে ২০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

‘বিএনপির স্থানীয় একজন নেতার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনদিন পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত ওই হত্যাকাণ্ড এবং হামলার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি, কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।’

তারা বলেন, হামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা রাতে নিজের বাড়িতে থাকছেন না। আশেপাশের গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে রাতে থাকছেন। ২২ মে বৃহস্পতিবার প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগুনে পুড়েছে এ গ্রামের বাড়িগুলো। একই সঙ্গে চলে লুটপাট ও ভাঙচুর।

বক্তারা বলেন, ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টা দশ মিনিটের দিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং পরে পৌনে সাতটায় আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস রাত এগারটার পর উপস্থিত হয়েছিল। হামলাকারীরা নিকটস্থ সুন্দলী বাজারের কয়েকটি দোকান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে।

‘ঘটনার দিন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশকেও আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসকেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এসে মণিরামপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটা দল এসে কিছুটা আগুন নিভিয়েছে।’

তারা বলেন, আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে বিভিন্ন অজুহাতে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার দুঃসহ স্মৃতিগুলো ভুলতে চেয়েছিল হিন্দুরা। হিন্দু সম্প্রদায় আশা করেছিল, বর্তমান সদাশয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় হিন্দু সম্প্রদায় সুখ-শান্তিতে ও আতঙ্কহীন জীবনযাপন করেতে পারবে। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের সে স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে।

‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সারা দেশের হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কগ্রস্ত।’

বক্তাগণ অবিলম্বে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচারের দাবি জানান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন।