৪৪ বছরে পা রাখলেন ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনি, যাকে ভালোবাসার সাথে ডাকা হয় ‘ক্যাপ্টেন কুল’। এবং চেন্নাই সুপার কিংসের ভক্তদের কাছে তিনি 'থালা'।
২০০৪ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া এই দীর্ঘকেশী যুবক অসামান্য উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান এবং একজন সফল অধিনায়ক হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের নাম খোদাই করেছেন।
ধোনির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান তাকে সর্বকালের সেরাদের একজন হিসেবে প্রমাণ করে। তার ঝুলিতে রয়েছে ১৭,২৬৬ আন্তর্জাতিক রান, উইকেটকিপার হিসেবে ৮২৯ ডিসমিসাল এবং ৫৩৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
ওয়ানডে ফরম্যাটে ধোনি ছিলেন সবচেয়ে বিধ্বংসী। ৩৫০ ম্যাচে ১০,৭৭৩ রান নিয়ে তার ব্যাটিং গড় ৫০.৫৭, যা নিচের দিকে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিরল।
তিনি ১০টি সেঞ্চুরি এবং ৭৩টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন, যার মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ১৮৩ রান*। তার বিখ্যাত 'হেলিকপ্টার শট' এবং দ্রুত স্টাম্পিং আজও ক্রিকেট ভক্তদের মনে গেঁথে আছে।
অধিনায়ক হিসেবে ধোনি ভারতকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গেছেন। ২০০টি ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ১১০টিতে জয় এনে দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে ভারত ২০১১ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ গৌরব অর্জন করে।
টি-টোয়েন্টিতেও তার নেতৃত্ব ছিল নির্ভীক। ৯৮ ম্যাচে ১,৬১৭ রান এবং ৩৭.৬০ গড় নিয়ে তিনি ২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেন।
টেস্ট ক্রিকেটেও ধোনির অবদান অনস্বীকার্য। ৯০টি টেস্ট ম্যাচে তিনি ৪,৮৭৬ রান করেছেন, গড় ৩৮.০৯। অধিনায়ক হিসেবে ৬০টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭টিতে জয় তুলে নিয়েছেন।
তার অধিনায়কত্বেই ভারত প্রথমবারের মতো আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে আসে এবং অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও ধোনি এক অনন্য নাম। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ২৭৮ ম্যাচে ৫,৪৩৯ রান এবং ৩৮.৩০ গড় নিয়ে তিনি ৫টি আইপিএল শিরোপা এবং ২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছেন।
চেন্নাই সুপার কিংসকে তিনি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
রাঁচির এই ছেলে দেশের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। মাঠে তার ঠান্ডা মাথা, অনন্য কৌশল এবং শেষ মুহূর্তে ছক্কা হাঁকানোর দৃশ্য আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভাসে।
আপনার মতামত লিখুন :