রাশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী রোমান স্তারোভোইতের নিজের বাড়ির কাছে গাড়িতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বারা বরখাস্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেল। তবে প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৭ জুলাই সকালে প্রকাশিত এক প্রেসিডেনশিয়াল ডিক্রিতে তাকে বরখাস্ত করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তবে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ৫৩ বছর বয়সি স্টারোভোইটের বরখাস্তের পেছনে দুর্নীতির তদন্ত জড়িত থাকতে পারে। তিনি আগে কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নর ছিলেন, যেটি ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
পরিবহন খাতের একটি সূত্র জানিয়েছে, কুরস্ক অঞ্চলে সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ করা তহবিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে স্টারোভোইট গত কয়েক মাস ধরেই চাপের মুখে ছিলেন। তবে রয়টার্স এসব দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, তার মৃত্যুর সময় ও পরিস্থিতি নিয়ে এখনও নানা তথ্য সামনে আসছে এবং বিস্তারিত জানার জন্য তদন্ত চলছে।
স্টারোভোইটের মৃত্যুর সময় নিয়ে নানা ধরনের প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে। রাশিয়ার তদন্ত কমিটি বলেছে, তারা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশটির কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তার গাড়ির ভেতরে মরদেহের পাশে একটি পিস্তল পাওয়া গেছে, যা স্টারোভোইটের নিজের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্টারোভোইট ২০২৪ সালের মে মাসে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে তিনি প্রায় পাঁচ বছর কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন।
মন্ত্রী হওয়ার তিন মাস পর ইউক্রেনের সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে কুরস্কে ঢুকে পড়ে, যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বড় বিদেশি অনুপ্রবেশ বলে বিবেচিত হয়। পরে যুদ্ধ ও ব্যাপক ধ্বংসের পর ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ওই অঞ্চল থেকে হটানো হয়।
২০২৪ সালের এপ্রিলে স্টারোভোইটের স্থলাভিষিক্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভের বিরুদ্ধে সীমান্ত প্রতিরক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তহবিল চুরি হওয়ায় কুরস্ক অঞ্চল আরও বেশি হামলার ঝুঁকিতে পড়ে।
সোমবার (৭ জুলাই) সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে জিজ্ঞেস করেন, বরখাস্তের অর্থ কি স্টারোভোইটের ওপর পুতিনের আস্থা হারানো? জবাবে পেসকভ বলেন, ‘যদি আস্থা হারানো হতো, তাহলে ডিক্রিতে সেটা উল্লেখ থাকত। কিন্তু তেমন কিছু বলা হয়নি।’
আপনার মতামত লিখুন :