অবৈধভাবে ইউরোপের দেশ ইতালিতে প্রবেশের চেষ্টাকালে দুই বাংলাদেশিকে সাগর থেকে উদ্ধার করে আলবেনিয়ায় পাঠিয়েছিল ইতালির নিরাপত্তা বাহিনী।
পরে তারা ইতালিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলে তা বাতিল করে ইতালি সরকার। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আদালতে মামলা করলে বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সর্বোচ্চ আদালতে গড়ায়।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ইইউর শীর্ষ আদালত রায় দেয়, কোনো অভিবাসন প্রত্যাশীকে ইতালি আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে পাঠাতে পারবে না। রায়টি দুই বাংলাদেশির পক্ষে গেলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
মেলোনি বলেন, ‘আবারও, এই বিচারব্যবস্থা—এবার ইউরোপীয় পর্যায়ে—নিজেদের এমন এক বিচারিক কর্তৃত্ব দাবি করছে, যা তাদের অধিকার নয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সবদিক দিয়ে লড়ব।’
এর আগে ২০২৩ সালে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে আলবেনিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করে ইতালি, যার আওতায় কিছু অবৈধ অভিবাসীকে আলবেনিয়ার ইতালি-নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল, সেখানেই তাদের আশ্রয়ের আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করা।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ‘নিরাপদ দেশের তালিকা’ হালনাগাদ করে বাংলাদেশ, মিশরসহ আরও কয়েকটি দেশকে সেই তালিকায় যুক্ত করে ইতালি। এই নীতির আওতায় ‘নিরাপদ দেশ’ থেকে কেউ অবৈধভাবে সাগরপথে ইতালিতে এলে তাদের দেশে না পাঠিয়ে প্রথমে আলবেনিয়ার কেন্দ্রে রাখার নিয়ম চালু করে মেলোনির সরকার।
তবে ইইউর সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ইইউ আইন কোনও সদস্য রাষ্ট্রকে তৃতীয় দেশকে নিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত করা থেকে বিরত রাখে না, তবে সেই মনোনয়ন বিচারিক পর্যালোচনার আওতায় থাকতে হবে।
রায়ের সমালোচনা করে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই রায় সবার জন্যই উদ্বেগজনক। এটি সরকার ও সংসদের স্বাধীন কার্যপরিধিকে আরও সংকুচিত করেছে।
এ বিষয়ে ইতালির উপপ্রধানমন্ত্রী ও কট্টর-ডানপন্থী নেতা মাত্তেও সালভিনি বলেন, এই রায় কলঙ্কজনক। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্বকে মুছে ফেলেছে।