নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের পরও জেন-জিদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালাচ্ছে। এর মধ্যে একটি গণমাধ্যমের কার্যালয়েও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যান বলছে, নেপালের বৃহত্তম মিডিয়া হাউস কান্তিপুর পাবলিকেশন্সে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর কার্যালয় থাপাথালিতে অবস্থিত, যেখানে কান্তিপুর ডেইলি এবং দ্য কাঠমান্ডু পোস্টেরও কার্যালয় রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নেপালের পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ভবনসহ প্রশাসনিক এলাকার বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পশ্চিম গেট ভেঙে প্রবেশ করে কাঠমান্ডুর সিংহ দরবার কমপ্লেক্সে এবং প্রধান ভবনে অগ্নিসংযোগ করে।
সিংহ দরবার নেপাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কমপ্লেক্স। ২০১৫ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা মূল গেট ভেঙে জোর করে ভেতরে প্রবেশ করে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। সানেপায় নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ললিতপুরে সিপিএন-ইউএমএল দলের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, এমনকি মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আহত হন। জেন-জি বিক্ষোভকারীরা তাদের সরকারি ও ব্যক্তিগত বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে।
এদিকে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ প্রাণঘাতী রূপ নিলে এবং ১৯ জন নিহত ও ৩০০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার পর তিনি পদ ছাড়েন। এর আগে বিক্ষোভকারীরা ‘কে পি চোর, দেশ ছাড়’ ও ‘দুর্নীতিবাজদের বিচার কর’ স্লোগানে রাজধানী কাঠমান্ডু কাঁপিয়ে তোলে।
এর মধ্যেই অলির ভক্তপুরের বাসভবনে আগুন লাগানো হয়, যদিও তিনি তখন বালুওয়াটারের সরকারি বাসভবনে অবস্থান করছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল, শেরবাহাদুর দেউবা ও ঝালানাথ খানালের বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
এ ছাড়া কাঠমান্ডুতে সরকার ও রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় বিক্ষোভকারীরা দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে। রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলে কারফিউ জারি থাকলেও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন