সীমান্তে চার দিন ধরে চলা গোলাগুলিতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৬০ জন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের (এজেকেএ) গ্রামগুলোতে এখনও আতঙ্ক কাটেনি।
রোববার (১১ মে) কিছু মানুষ ঘরে ফিরেছে, তবে সবাই মজুদ করে রেখেছে চাল, আটা, পানি ও ওষুধ- সবকিছু বাঙ্কারেই। কারণ, কারও ভারতের ওপর আস্থা নেই।
নিলম নদীর ধারে চাকোঠি গ্রামের বাসিন্দা কালা খান বলেন, ‘ভারত আবার হামলা চালাবে আমি নিশ্চিত। তাই বাঙ্কার না থাকলে এখানে বাঁচা যায় না।’
তার পরিবার চার দিন ধরে দুটি কংক্রিটের বাঙ্কারে ছিল। তিনি বলেন, ‘গোলাবর্ষণ শুরু হলেই আমরা বাঙ্কারে চলে যাই। ওখানেই খাবার, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে দিয়েছি।’
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় এক হাজারের বেশি বাঙ্কার বানানো হয়েছে। এর এক-তৃতীয়াংশ বানিয়েছে সরকার, বাকিগুলো বানিয়েছে সাধারণ মানুষ নিজেরাই।
শান্তি নেই, ভরসা নেই
ভারত ও পাকিস্তান বহু বছর ধরে কাশ্মীর নিয়ে লড়াই করে আসছে। দিল্লি বলছে, পাকিস্তান কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীদের সহায়তা করে। পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।
চাকোঠির সরকারি কর্মচারী মোহাম্মদ মুনীর বলেন, ‘আমি ৫০ বছর ধরে এই সীমান্তে বাস করছি। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়, কিন্তু কয়েকদিন পরেই আবার গুলি শুরু হয়। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় গরিবদের।’
নির্মাণশ্রমিক কাশিফ মিনহাস বলেন, ‘আমাকে স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে পালাতে হয়েছিল। যুদ্ধবিরতি শুধু কাগজে-কলমে। আবারও গোলাগুলি হলে আমাদের পালাতে হবে।’
আতঙ্ক দুই পাশেই
আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর তিনজন নিহত হন। তবে রোববার সকাল থেকে কোনো গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়নি।
এই চার দিনের লড়াইয়ে বহু বছর পর রাজধানী শহরগুলোর মানুষও আতঙ্কে পড়ে। প্রাণহানির বেশিরভাগই পাকিস্তানে হয়েছে এবং তারা সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরেও মানুষ ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরছে। কিন্তু তাদের মনেও ভয়। চাকোঠির ট্যাক্সিচালক মোহাম্মদ আখলাক বলেন, ‘এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে, এমন আশা নেই। কারণ, আসল সমস্যা কাশ্মীর, তা এখনো মেটেনি।’
আপনার মতামত লিখুন :