পাকিস্তান সমর্থনের দায়ে ভারতের তুরস্ক ভ্রমণ বর্জনের আন্দোলন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। পর্যটনের পাশাপাশি এবার তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও একাডেমিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছে দেশটি। পাক-ভারত সংঘাতে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তুরস্কের সাথে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার চেলেবিকে, তুরস্কের প্রতিষ্ঠান, ভারতে কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ করতে বলেছে দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এক বার্তায় বলেন, ‘সারা দেশ থেকে এ তুর্কি কোম্পানিকে নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে। জাতীয় স্বার্থে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে মন্ত্রণালয় কোম্পানিটির অনুমোদন বাতিল করেছে।’
বার্তাসংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকা কোম্পানি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ নিষেধাজ্ঞা বাতিলের জন্য তারা আইনি পথে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভারতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে চলমান একাডেমিক সহযোগিতা কার্যক্রমও স্থগিত করেছে।
সম্প্রতি ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। ওই ঘটনায় দায় অস্বীকার করলেও ভারতের হামলার জবাব দেয় পাকিস্তান। এর পরই ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে শুরু হয় উত্তেজনা। এ পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায় তুরস্ক ও আজারবাইজান।
এর জের ধরে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেন দেশটির নাগরিকরা। তুরস্ক ও আজারবাইজান বর্জনেরও ডাক দেন বিজেপি নেতাসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। এরই মধ্যে পাকিস্তানের হাতে তুরস্কের ড্রোন ব্যবহারের খবরে এ বর্জনের আহ্বান আরও জোরালো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে ভারত ও পাকিস্তানের উত্তেজনা ক্রমে স্তিমিত হলেও তুরস্ক ও আজারবাইজান বর্জনের ডাক দ্রুত প্রভাব ফেলেছে ভারতের পর্যটন খাতে। বিভিন্ন ট্রাভেল সাইটের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে তুরস্ক ও আজারবাইজানে ভ্রমণ বাতিলের হার ২৫০ শতাংশ বেড়েছে এবং বুকিং কমেছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।
ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করলেও অধিকাংশ ভ্রমণ সাইট তুরস্ক ও আজারবাইজানে টিকিট বুকিং চালু রেখেছে। দিল্লির পর্যটন উদ্যোক্তা রোহিত খাত্তর বলেন, ‘অনেক তরুণ ভ্রমণকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ভয়ে তুরস্ক ভ্রমণ এড়িয়ে চলছেন। আমরাও এখন এমন প্যাকেজে বিনিয়োগ করছি না, যেগুলো শেষমেশ বাতিল হতে পারে।’
আপনার মতামত লিখুন :