গুজরাটের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। তবে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছেন এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১-এর এক যাত্রী।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দিল্লি থেকে লন্ডনগামী এই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি বৃহস্পতিবার দুপুরে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই আহমেদাবাদের মেঘানি নগরের একটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন কেবিন ক্রু।
আহমেদাবাদ পুলিশ ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো প্রাথমিকভাবে জানায়, দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই। পুলিশ কমিশনারও একই মন্তব্য করেন।
তবে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন এক যুবক, যিনি বিমানের ১১-ই নম্বর আসনে বসা ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাঁটতে দেখা গেছে। তার পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট ও কালো ট্রাউজার, মুখ ও কপালে ছিল জখমের দাগ।
পরে আহমেদাবাদ পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করে ‘একজন বেঁচে গেছেন’ এবং তাকে চিকিৎসাসেবার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বেঁচে যাওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বিস্ময়’ তৈরি করেছে। অনেকেই এটিকে ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা’, ‘অলৌকিক ঘটনা’ এবং ‘নতুন জীবন পাওয়া’ বলে মন্তব্য করছেন।
এদিকে, বিমান দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করার পর কিছুটা দুলতে দুলতে এগিয়ে যাচ্ছিল। এর কিছু সময় পর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আঘাত হানে।
বিমান চলাচল বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাবেক ক্যাপ্টেন সৌরভ ভাটনাগর এনডিটিভিকে জানান, উড্ডয়নের পর সম্ভবত বিমানটির পাখির আঘাতে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞের মতে, উড্ডয়নের সময় বিমানটির শক্তির অভাব দেখা দেয়, যার ফলে বিমানটি ওপরের দিকে উঠতে ব্যর্থ হয় এবং এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
ভাটনাগর বলেন, ‘প্রথমতো, মনে হচ্ছে একাধিক পাখি আঘাত হানায় দুটি ইঞ্জিনও বিকল হয়ে গেছে। উড্ডয়ন ছিল নিখুঁত, তবে ল্যান্ডিং গিয়ারটি ওপরে তোলার আগেই বিমানটি নিচে নামা শুরু করে। এর কারণ সাধারণত ইঞ্জিনের বিকল হওয়া অথবা বিমানের আকাশে থাকার সামর্থ্য হারানো।’
তিনি আরও জানান, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে উড্ডয়ন ছিল বেশ সুন্দর এবং বিমানটি নিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে নেমে আসে। পাইলট জরুরি পরিস্থিতির জন্য ‘মে ডে’ কল করেছিলেন, যা দেখায় যে বিমানটি তীব্র পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল।
ঘটনার এখনো তদন্ত চলছে এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।