ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

গাজার বাসিন্দাদের আকুতি

মনে হচ্ছে দুনিয়া আমাদের ভুলে গেছে

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম
গাজা এখন এক ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি । ছবি - সংগৃহীত

গাজার ফিলিস্তিনবাসীদের পরিস্থিতি বর্ণনায় জাতিসংঘ ‘অমানবিক’ শব্দ ব্যবহার করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৫ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার প্রতি পাঁচজনের একজন চরম ক্ষুধার্ত অবস্থায় আছে এবং পুরো উপত্যকা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

ইতিহাসবিদরা গাজার এই মানবিক সংকটকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি শিবিরগুলোর মতো একটি পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। গাজার বাসিন্দারা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে তাদের দুর্দশা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার সতর্ক করে বলেছেন, জীবনধারণের মৌলিক চাহিদাগুলোতে অবিলম্বে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত না করা হলে, গাজা দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হতে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ কার্যক্রম গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) চালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে মে মাসের শেষ থেকে অন্তত ৩০০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজার বাসিন্দা আবু মোহাম্মদ বলেন, ‘মানুষ খাওয়ার মতো কিছুই পাচ্ছে না। এক বস্তা ময়দার দাম এখন আগের চেয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ গুণ বেশি...সত্যিই মনে হচ্ছে বিশ্ব আমাদের ভুলে গেছে।’

আর ছোট্ট বিসান কুয়াইদা, যার বাবা খাবার আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, তার কাছে বাবার একমাত্র রেখে যাওয়া জিনিসটি ছিল এক জোড়া জুতো। জুতোজোড়া বুকে ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে গাজার ছোট্ট শিশু বিসান সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিচ্ছিল তাদের নামে, যারা তার বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিসান কাঁদছিল আর বলছিল, ‘আল্লাহ তোমাদের বিচার করুক।’

গাজার এই মানবিক সংকটের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু ত্রাণ সহায়তা নয়, বরং গাজার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।